Class 7

পদার্থের সুলুকসন্ধান ২০২৪।সপ্তম শ্রেণী|বিজ্ঞান অনুশীলন বই।

পদার্থের সুলুকসন্ধান! অর্থাৎ পদার্থের খোঁজখবর। এই যে আমাদের চারপাশে এত বস্তু আমরা দেখি তার ভেতরকার গঠন আসলে কেমন? পদার্থকে আমরা যদি ভাঙতে থাকি, তাহলে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর পর্যায়ে গিয়ে আমরা আসলে কী দেখব? ঠিক কী কারণে আমরা একেক পদার্থে একেক রকম বৈশিষ্ট্য দেখি? এই সকল প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আমাদের এবারের শিখন অভিজ্ঞতা ‘পদার্থের সুলুকসন্ধান!’

প্রথম ও দ্বিতীয় সেশন ঃ

ধাতুঃ যে সকল পদার্থ চকচকে, আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ করে এবং তাপ ও বিদ্যুৎ সুপরিবাহী সেগুলোকে ধাতু বলে। যেমন: স্টিল, লোহা, তামা, আলুমিনিয়াম ইত্যাদি।

অধাতুঃ যে সকল পদার্থ চকচকে নয়, ভঙ্গুর, আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ করে না এবং তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী নয় সেগুলোকে অধাতু বলে। যেমন: কাঠের বস্তু, প্লাস্টিকের বস্তু, কাপড় ইত্যাদি।

বস্তুর নাম

বস্তুটি যে
পদার্থ দিয়ে তৈরি

বস্তুটির
বাহ্যিক অবস্থা (কঠিন / তরল / বায়বীয়
 

বস্তুটির
বৈশিষ্ট্য কী কী (ভঙ্গুর কিনা
, আঘাত করলে ঝনঝন
শব্দ হয় কিনা
, চকচকে কিনা
ইত্যাদি

বস্তুটি কি কাজে
লাগে
?

কড়াই

লোহা

কঠিন

ভঙ্গুর কিনা = না
আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় কিনা = হ্যা
চকচকে কিনা = হ্যা

খাবার রাখা বা রান্না করার জন্য ব্যবহৃত হয়। 

ফ্যান

লোহা

কঠিন

ভঙ্গুর কিনা = না
আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় কিনা = হ্যা
চকচকে কিনা = হ্যা

ঘর ঠাণ্ডা বা
শীতল করতে ব্যবহৃত হয়।
 

হাড়ি

এলুমিনিয়াম/দস্তা/স্টীল

কঠিন

ভঙ্গুর কিনা = না
আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় কিনা = হ্যা
চকচকে কিনা = হ্যা

খাবার রাখা বা রান্না করার জন্য ব্যবহৃত হয়। 

চেয়ার/টেবিল

কাঠ

কঠিন

ভঙ্গুর কিনা = হ্যাঁ
আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় কিনা = না
চকচকে কিনা = না

বসার জন্য
ব্যবহৃত হয়।

টুল/বেঞ্চ

কাঠ

কঠিন

ভঙ্গুর কিনা = হ্যাঁ
আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় কিনা = না
চকচকে কিনা = না

বসার জন্য
ব্যবহৃত হয়।

হোয়াইট  বোর্ড

প্লাস্টিক 

কঠিন

ভঙ্গুর কিনা = হ্যাঁ
আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় কিনা = না
চকচকে কিনা = না

লেখার জন্য
ব্যবহৃত হয়।

ডাস্টার

প্লাস্টিক,কাঠ ও কাপড়

কঠিন 

ভঙ্গুর কিনা = হ্যাঁ
আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় কিনা = না
চকচকে কিনা = না

লেখা মুছার জন্য ব্যবহৃত হয়।

কলম

প্লাস্টিক 

কঠিন 

ভঙ্গুর কিনা = হ্যাঁ
আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় কিনা = না
চকচকে কিনা = না

লেখার জন্য
ব্যবহৃত হয়।

এল..ডি লাইট

প্লাস্টিক 

কঠিন 

ভঙ্গুর কিনা = হ্যাঁ
আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় কিনা = না
চকচকে কিনা = না

ঘর আলোকিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। 

থালা-বাসন

প্লাস্টিক 

কঠিন 

ভঙ্গুর কিনা = হ্যাঁ
আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় কিনা = না
চকচকে কিনা = না

খাবার রাখার
জন্য ব্যবহৃত হয়।

সুইচ বোর্ড

প্লাস্টিক 

কঠিন 

ভঙ্গুর কিনা = হ্যাঁ
আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় কিনা = না
চকচকে কিনা = না

বিদ্যুৎ সংযোগের
কাজে ব্যবহৃত হয়।

গরম হাঁড়ি-পাতিল ধরতে গেলে কাঠের হাতল বা কাপড়ের হাতা ব্যবহার করা হয়, কেন?

উত্তর : গরম হাঁড়ি-পাতিল ধরতে গেলে কাঠের হাতল বা কাপড়ের হাতা ব্যবহার করা হয়। কারণ কাঠ বা কাপড় তাপ পরিবহন করে না। তাই এটি সহজে গরম হয় না। ফলে এগুলো দিয়ে গরম হাঁড়ি-পাতিল ধরলে হাত পুড়ে যায় না।

বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য যে তার ব্যবহার করা হয় তার উপরের স্তর প্লাস্টিকের হলেও ভেতরে তামার তার ব্যবহৃত হয়, সেটাই বা কেন?

উত্তর: বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য যে তার ব্যবহৃত হয় তার ভিতরে থাকে তামার তার যা বিদ্যুৎ পরিবহন করে। সরাসরি তামার তার যদি বৈদ্যুতিক কাজে ব্যবহার করা হয়, তবে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। অন্যদিকে তামার তারের উপরে প্লাস্টিকের স্তর দেওয়া হয়, কারণ প্লাস্টিক বিদ্যুৎ অপরিবাহী। যার ফলে সহজে কোন দুর্ঘটনা ঘটে না।

কেন কাঠ, প্লাস্টিক বা কাপড় যে বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে, তার থেকে অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল, লোহা, তামা এদের ধর্ম আলাদা হয়?

উত্তর: কাঠ, প্লাস্টিক বা কাপড় হলো অধাতু। এরা তাপ ও বিদ্যুৎ অপরিবাহী। এদের আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় না। অন্যদিকে অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল, তামা হলো ধাতু। এরা তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী। এরা দেখতে চকচকে এবং আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয়।

উপরের ছকের বস্তুগুলোকে আলোচনার মাধ্যমে নিচের শর্ত অনুযায়ী শ্রেণিবদ্ধ করোঃ

বস্তুর
নাম

কী
দিয়ে তৈরি

ধা্তু নাকি অধাতু

তাপ পরিবহন করে কিনা?

বিদ্যুৎ পরিবহন করে কিনা।

চেয়ার/টেবিল

কাঠ

অধাতু

না/তাপ অপরিবাহী

না/বিদ্যুৎ অপরিবাহী

কাপড় 

সুতা

অধাতু

না/তাপ অপরিবাহী

না/বিদ্যুৎ অপরিবাহী

তামার তার

তামা

ধাতু

হ্যাঁ/তাপ সুপরিবাহী

হ্যাঁ/বিদ্যুৎ সুপরিবাহী

হাড়ি

লোহা

ধাতু

হ্যাঁ/তাপ সুপরিবাহী

হ্যাঁ/বিদ্যুৎ সুপরিবাহী

স্টিল 

স্টিল 

ধাতু

হ্যাঁ/তাপ সুপরিবাহী

হ্যাঁ/বিদ্যুৎ সুপরিবাহী

লোহা

লোহা

ধাতু

হ্যাঁ/বিদ্যুৎ সুপরিবাহী

হ্যাঁ/বিদ্যুৎ সুপরিবাহী

প্লাস্টিকের
পদার্থ
 যেমন বৈদ্যুতিক সুইচ বোর্ড

প্লাস্টিক 

অধাতু

না/বিদ্যুৎ অপরিবাহী

না/বিদ্যুৎ অপরিবাহী

যেসব পদার্থ বিদ্যুৎ ও তাপ পরিবহন করে, তাদের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগুলো কী? (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ১৯)

উত্তর: বিদ্যুৎ ও তাপ পরিবাহী পদার্থের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য-
১. সাধারণত উজ্জ্বল হয়।
২. এগুলো সাধারণত শক্ত ও ওজনে ভারী হয়।
৩. আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয়।
৪. এগুলো ঘাতসহ ও নমনীয় ।
৫. এগুলোকে পিটিয়ে পাতলা পাতে ও সরু তারে পরিণত করা যায়।

কেন কিছু কিছু পদার্থ দিয়ে তৈরি বস্তু তাপ পরিবহন করে আবার কিছু বস্তু করে না? (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ১৯)

উত্তর: ধাতু জাতীয় পদার্থের পরমাণুগুলোর শেষ কক্ষপথে যে ইলেকট্রন থাকে সেগুলো সাধারণত খুব দুর্বলভাবে আটকে থাকে বা মুক্ত অবস্থায় থাকে। ধাতব স্ফটিকে এরকম মুক্তভাবে থাকা ইলেক্ট্রনকে সঞ্ছারনশীল ইলেক্ট্রন বলে। ফলে খুব সহজেই সেটি এক পরমাণু থেকে অন্য পরমাণুতে যেতে পারে। এই মুক্ত ইলেকট্রন দিয়ে তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবহন হয়ে থাকে। অধাতুর পরমাণুর শেষ কক্ষপথে সঞ্ছারনশীল ইলেকট্রন নেই, তাই সেখানে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করার জন্য কোনো মুক্ত ইলেকট্রন নেই। তাই অধাতু তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবহন করে না।

তৃতীয় ও চতুর্থ সেশন ঃ

পরমাণু মডেলে ইলেক্ট্রনগুলো কয়টি কক্ষপথে সাজানো আছে, পারমানবিক ভর, সংখ্যা ইত্যাদিঃ

ধাতু ও অধাতুর পার্থক্যঃ (পৃষ্ঠা নং ২১)

ধাতু

অধাতু

১. সাধারণত উজ্জ্বল হয়

১. সাধারণত উজ্জ্বল নয়

২. সাধারণত শক্ত ও ওজনে ভারী হয়।

 

২. সাধারণত নরম ও ওজনে তুলনামূলক কম ভারী হয়।

৩. ধাতুকে আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয়।

৩. অধাতুকে আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় না।

৪. তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী।

 

৪. তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী নয়।

৫. ঘাতসহ ও নমনীয়। একে পিটিয়ে পাতলা পাতে ও সরু তারে পরিণত করা যায়।

৫. অধাতুকে পিটিয়ে পাতলা পাতে কিংবা সরু তারে পরিণত করা যায় না।

পরিবাহী পদার্থ বলতে কী বুঝ?

উত্তর: যেসব পদার্থের মধ্য দিয়ে তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবহন হয়, তাদেরকে পরিবাহী বলে। যেমন- লোহা(Fe), তামা(Cu), নিকেল(Ni), সোনা(Au) রূপা(Ag),আলুমিনিয়াম(Al) ইত্যাদি।

অপরিবাহী পদার্থ কাকে বলে?

উত্তর: উত্তর: যেসব পদার্থের মধ্য দিয়ে তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবহন হয় না, তাদেরকে অপরিবাহী বলে। যেমন- সালফার(S), ফসফরাস(P), নাইট্রোজেন(N) ইত্যাদি।

অর্ধপরিবাহী পদার্থ কাকে বলে?

উত্তর: যেসব পদার্থের তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতা সাধারণ তাপমাত্রায় পরিবাহী ও অপরিবাহী পদার্থের মাঝামাঝি সেসব পদার্থকে অর্ধপরিবাহী বলে। যেমন- জার্মেনিয়াম, সিলিকন(Si)ইত্যাদি।

ইলেকট্রন বিন্যাসের কোন পার্থক্যের কারণে ধাতু বেশি তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী হয়?

উত্তর: ধাতব স্ফটিকে ধাতব বন্ধন থাকে। ধাতব পরমাণুগুলো এদের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর থেকে এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে।ধাতুর পরমাণুসমূহ যে ইলেকট্রন ত্যাগ করে  সেই ইলেকট্রনগুলো ধাতব স্ফটিকের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানে মুক্তভাবে চলাচল করে।এদেরকে সঞ্চারণশীল ইলেকট্রন বলে।

সঞ্চারণশীল ইলেকট্রনগুলো কোন ধাতব পরমাণুর সাথে নির্দিষ্টভাবে যুক্ত থাকে না। এই সঞ্চারণশীল ইলেকট্রন যেহেতু সমস্ত ধাতব স্ফটিকের উপর মুক্তভাবে চলাচল করার কারনে এরা তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবহনে সহায়তা করে।এজন্য ধাতুসমূহ তাপ এবং বিদ্যুৎ সুপরিবাহী হয়।

দৈনন্দিন জীবনে তাপ ও বিদ্যুৎ সম্পর্কিত কাজের উদাহরণঃ

যে কাজে প্রয়োজন (উদাহরণ) চুলায় রান্না

ধাতু/অধাতু
কোনটি বেশি উপযোগী
উদাহরণ: ধাতু, যেমন-অ্যালুমিনিয়াম,স্টিল, লোহা ইত্যাদি

বৈদ্যুতিক তার

ধাতু যেমন- তামা, নাইক্রোমটাংস্টেন

বৈদ্যুতিক বাল্ব

ধাতু যেমন- টাংস্টেন, অধাতু-প্লাস্টিক

পাখা চালানো

ধাতু

তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র

ধাতু যেমন- পারদ

ব্যাটারী তৈরী

ধাতু যেমন- পিতল, দস্তা, তামা। অধাতু-কয়লা, কার্বন

জেনারেটর চালানো

ধাতু

কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের পরমাণুগুলো কীভাবে বিন্যাস্ত থাকে?

উত্তর : কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের পরমাণুগুলো কীভাবে বিন্যাস্ত থাকে তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ
কঠিন: কঠিন পদার্থের কণাগুলো খুব কাছাকাছি এবং নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকে, একটির সাপেক্ষে অন্যটি নড়তে পারে না,কিন্তু কম্পন থাকে। তাই কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট আকার হয়। কাছাকাছি থাকার কারণে কঠিন পদার্থের উপর চাপ প্রয়োগ করলে এগুলো সংকুচিত হয় না এবং গ্যাস কিংবা তরলের মতো প্রবাহিত করা যায় না।
তরল: পদার্থ যখন তরল অবস্থায় থাকে তখন কণাগুলো তুলনামূলকভাবে কাছে হলেও একটা কণা অন্য কণার সাপেক্ষে নড়তে পারে, তাই সেগুলোর নির্দিষ্ট আয়তন থাকলেও কোনো নিয়মিত আকার নেই এবং তরল সহজেই প্রবাহিত হয়। তরল পদার্থকে যে পাত্রে রাখা হয় তরল পদার্থ সেই পাত্রের আকার ধারণ করে। তরল পদার্থের কণাগুলো কাছাকাছি থাকায় সেগুলোর মধ্যে ফাঁকা জায়গা নেই বলে চাপ দিয়ে সংকুচিত করা যায় না।
গ্যাসীয়: যখন কোনো পদার্থ গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে, তখন তার কণাগুলো মুক্ত অবস্থায় থাকে এবং একটি থেকে অন্যটির দূরত্ব হয় বেশি। সেজন্য সেগুলোর কোনো নিয়মিত আকার বা আয়তন নেই, গ্যাসকে যে পাত্রে রাখা হয়, সেই পাত্রের পুরো আয়তন দখল করে।
গ্যাসের কণাগুলো একে অপর থেকে অনেক দূরে দূরে অবস্থান করে তাই চাপ প্রয়োগ করে এগুলোকে সহজেই সংকুচিত করা যায়। গ্যাসের কণাগুলো অন্য কণার সাপেক্ষে ছুটতে পারে বলে গ্যাস সহজেই প্রবাহিত হয়।

পঞ্চম ও ষষ্ট সেশন ঃ

পানি কিভাবে আগুন নেভাতে সাহায্য করে?

উত্তর: আগুনের সংস্পর্শে পানি গেলে আগুনের তাপে পানি বাষ্পে পরিণত হয়। এই বাষ্প অক্সিজেনকে আগুনের সংস্পর্শে যেতে বাঁধা দেয়। আর আমরা সকলেই জানি অক্সিজেন ছাড়া আগুন জ্বলতে পারেনা। এভাবেই পানি আগুন নেভায়।

কার্বন ডাই অক্সাইড কীভাবে আগুন নেভাতে সাহায্য করে?

উত্তর: কার্বন ডাই অক্সাইড নিজে দাহ্য নয় এবং দহনে সাহাহ্য ও করেনা। বাতাসে যদি অক্সিজেনের ঘনত্ব বেশি থাকে তাহলে আগুন বেড়ে যায় আর যদি কার্বন – ডাইঅক্সাইডের ঘনত্ব বেশি থাকে তবে আগুন নিভে যায়।

পদার্থ কী?

পদার্থ: যে সকল বস্তুর ভর ও নির্দিষ্ট আয়তন আছে ,বল প্রয়োগে বাঁধা প্রদান করে,তাদেরকে পদার্থ বলে।

মৌলিক পদার্থ কী?

উত্তর: যেসকল পদার্থকে ভাঙ্গলে ঐ পদার্থ ছাড়া অন্যকোন পদার্থ পাওয়া যায় না তাকে মৌলিক পদার্থ বলে। যেমন: কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H), অক্সিজেন (O)

যৌগিক পদার্থ কাকে বলে?

উত্তর:যে সকল পদার্থকে ভাঙ্গলে দুই বা দুইয়ের অধিক মৌলিক পদার্থ পাওয়া যায় তাকে যৌগিক পদার্থ বলে। যেমন: পানি (H2O), কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2)
যৌগিক পদার্থের ধর্ম হচ্ছে সেটি যে মৌলিক পদার্থ দিয়ে তৈরি তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়।

পদার্থ

স্বাভাবিক তাপমাত্রায় অবস্থা (কঠিন/তরল/ বায়বীয়)

আগুনে দাহ্য কিনা

অন্যান্য বৈশিষ্ট্য (স্বাদ/গন্ধ/বর্ণ) যদি জানা থাকে

অক্সিজেন(O2)

বায়বীয়

হ্যা

স্বাদহীন, গন্ধহীন, বর্ণহীন

হাইড্রোজেন(H2)

বায়বীয়

হ্যা

স্বাদহীন, গন্ধহীন, বর্ণহীন

পানি(H2O)

তরল

না

স্বাদহীন, গন্ধহীন, বর্ণহীন

কার্বন ডাই অক্সাইড (C02)

বায়বীয়

না

স্বাদহীন, গন্ধহীন, বর্ণহীন

কার্বন (C)

কঠিন 

হ্যা

স্বাদহীন, গন্ধহীন।

মিশ্রণ কি?

মিশ্রণ: দুই বা ততোধিক মৌলিক বা যৌগিক পদার্থ একত্রে অবস্থান করাকে মিশ্রণ বলে।
যেমন: বায়ু (নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড বা বাষ্প ইত্যাদি থাকে), লবণ এবং পানির মিশ্রণ , চিনি-লবণ মিশ্রণ।
নোটঃ মিশ্রনের উপাদানগুলোর নিজ নিজ ধর্ম বজায় থাকে। একাধিক মৌল বা যৌগ রাসায়নিকভাবে যুক্ত হয় না।
যেমন: ঝালমুড়িতে বিভিন্ন উপাদানের(মুড়ি,চানাচুর,পেয়াজ,মরিচ,ইত্যাদি)  মিশ্রণ থাকে যারা একে অপরের সাথে মিশ্রিত অবস্থায় থাকলেও নতুন কোন যৌগের সৃষ্টি হয়না।দ্রবনও এক প্রকারের মিশ্রণ। তবে দ্রবনএবং মিশ্রনের পার্থক্য হলো দ্রবনের উপাদান গুলো আলাদা করা যায় না,মিশ্রনের উপাদানগুলোকে আলাদা করা যায়।

বিশুদ্ধ পদার্থ কি?

বিশুদ্ধ পদার্থ: যে পদার্থগুলোর মধ্যে একাধিক পদার্থ মিশে থাকে না তাদেরকে বিশুদ্ধ পদার্থ বলে।
যেমন: পানি, চিনি, লবণ, কার্বন ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজন, হাইড্রোজেন ইত্যাদি ।

পদার্থ

স্বাভাবিক তাপমাত্রায় অবস্থা (কঠিন/তরল/বায়বীয়)

আগুনে দাহ্য কিনা?

অন্যান্য বৈশিষ্ট্য (স্বাদ, বর্ণ, গন্ধ)

পানি

তরল

না

স্বাদহীন,বর্ণহীন, গন্ধহীন

লবন/চিনি

কঠিন (লবণ)

না

নোনতা,গন্ধহীন, বর্ণঃ সাদা,লাল,নীল, সবুজ ইত্যাদি।

লবন/চিনি

কঠিন ( চিনি)

না

মিষ্টি,গন্ধহীন, বর্ণঃ সাদা, লাল, বাদামী

পানি ও লবন/চিনি মিশ্রনে তৈরী সরবত

তরল

না

চিনি ও লবনের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে

মৌল বা যৌগের সংকেত

কোণ মৌলের কয়টি পরমাণু রয়েছে?

CO

কার্বন ১টি, অক্সিজেন ১টি

H2SO4

হাইড্রোজেন ২টি, সালফার ১টি, অক্সিজেন ৪টি

O3

অক্সিজেন ৩টি

N2O

নাইট্রোজেন ২টি,অক্সিজেন ১টি

সপ্তম ও অষ্টম  সেশনঃ

খুঁটির ছায়ার দৈর্ঘ্যের পার্থক্য হওয়ার কারণ কী?

★খুঁটির ছায়ার দৈর্ঘ্যের পার্থক্য হওয়ার কারণ:

সূর্যের উচ্চতা সারাদিন পরিবর্তিত হয়। সূর্যোদয়ের সময়, সূর্য দিগন্তের কাছাকাছি থাকে এবং ছায়া দীর্ঘ হয়। দুপুরের সময়, সূর্য আকাশে সবচেয়ে উঁচুতে থাকে এবং ছায়া সবচেয়ে ছোট হয়। সূর্যাস্তের সময়, সূর্য আবার দিগন্তের কাছাকাছি চলে আসে এবং ছায়া আবার দীর্ঘ হয়।

*মৌলিক পদার্থ, যৌগিক পদার্থ এবং মিশ্রনের অনু,পরমাণুগুলো কিভাবে বিন্যস্ত থাকে? এবং এদের পার্থক্য কী?

অনু পরমাণু গুলোর বিন্যাস:

মৌলিক পদার্থ: একই রকম পরমাণুগুলি নিয়মিতভাবে সাজানো থাকে।কেলাস, ঘনক্ষেত্র, ষড়ভুজাকার ইত্যাদি কাঠামো তৈরি করে।
যৌগিক পদার্থ: ভিন্ন ধরনের পরমাণুগুলি নির্দিষ্ট অনুপাতে সাজানো থাকে।নির্দিষ্ট আকার এবং আকৃতির অণু তৈরি করে।
মিশ্রণ: উপাদানগুলির অনু পরমাণু গুলোর কোন নির্দিষ্ট বিন্যাস থাকে না।উপাদানগুলি এলোমেলোভাবে মিশ্রিত থাকে।


মৌলিক পদার্থ, যৌগিক পদার্থ এবং মিশ্রনের মধ্যে পার্থক্যঃ

বৈশিষ্ট্য

মৌলিক পদার্থ

যৌগিক পদার্থ

মিশ্রণ

উপাদান

একই রকম পরমাণু

ভিন্ন ধরণের
পরমাণু

ভিন্ন ধরণের
পদার্থ

অনুপাত

নির্দিষ্ট

নির্দিষ্ট

নির্দিষ্ট নয়

বন্ধন

রাসায়নিক বন্ধন

রাসায়নিক বন্ধন

শারীরিক বন্ধন

বিভাজন

ভাঙ্গা যায়না

ভাঙ্গা যায়

আলাদা করা
যায়

উদাহরণ

অক্সিজেন,
হাইড্রোজেন

পানি, কার্বন
ডাই অক্সাইড

বাতাস, ব্রোঞ্জ,
লবণাক্ত জল

তোমার দল একই পানি এবং পানি লবনের মিশ্রণের স্ফুটনাংক একাধিকবার পরিমাপ করলে ফলাফল কী হুবহু একই এসেছে?

একই পানি এবং পানি লবনের মিশ্রণের স্ফুটনাংক একাধিকবার পরিমাপ করলে ফলাফল প্রতিবার একই হবে।
কারণ, স্ফুটনাংক হলো একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা যেখানে কোন পদার্থের বাষ্পচাপ তরলের চাপের সমান হয়। পানি এবং পানি লবনের মিশ্রণের ক্ষেত্রে, স্ফুটনাংক নির্ভর করে মিশ্রণে লবণের পরিমাণের উপর।


*সকল দল একই পানি এবং পানি লবনের মিশ্রণের স্ফুটনাংক  পরিমাপ কি একই হয়েছে নাকি আলাদা?

বিভিন্ন দল একই পানি এবং পানি-লবনের মিশ্রণের স্ফুটনাংক একাধিকবার পরিমাপ করলে ফলাফল একেবারে একই না এলেও খুব কাছাকাছি এসেছে।

*কেন একই পদার্থ হওয়ার পরেও স্ফুটনাংক হুবহু একই হলোনা ?

ফলাফলের ভিন্নতা আসার কারণ হতে পারে-
  • পরিমাপের ত্রুটি,
  • যন্ত্রপাতির ত্রুটি,
  • মানুষের ত্রুটি,
  • পরিবেশগত প্রভাব।

কি প্রক্রিয়ায় এই পরমাপ করা হয়েছে? কোন দলের ফলাফল সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য?

তাপীয় উৎস যেমন হিটার ব্যবহার করে পানি উত্তপ্ত করা হয়। পানি ফুটতে শুরু করলে রাসায়নিক থার্মোমিটার ব্যবহার করে রিডিং নেয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটি লবনপানি মিশ্রনের জন্য পুনরাবৃত্তি করা হয়।

যে দলটি সাবধানতার সাথে পরিমাপ করে এবং নির্ভরযোগ্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে তাদের ফলাফল বেশি নির্ভরযোগ্য।ফলাফলের নির্ভুলতা নিশ্চিত করার জন্য একাধিকবার পরীক্ষা করা উচিত।

As an Amazon Associate I earn from qualifying purchases.

veg_admin

View Comments

Share
Published by
veg_admin
Tags: কার্বন ডাই অক্সাইড কীভাবে আগুন নেভাতে সাহায্য করে?কেন কাঠকেন কিছু কিছু পদার্থ দিয়ে তৈরি বস্তু তাপ পরিবহন করে আবার কিছু বস্তু করে না?কেন?গরম হাঁড়ি-পাতিল ধরতে গেলে কাঠের হাতল বা কাপড়ের হাতা ব্যবহার করা হয়তাদের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগুলো কী?তামা এদের ধর্ম আলাদা হয়?তার থেকে অ্যালুমিনিয়ামধাতু ও অধাতুর পার্থক্যঃপদার্থ কী?পদার্থের বৈশিষ্ট্যপদার্থের সুলুকসন্ধানপরমাণু মডেলপরিবাহী পদার্থ বলতে কী বুঝ?পানি কিভাবে আগুন নেভাতে সাহায্য করে?প্লাস্টিক বা কাপড় যে বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করেবিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য যে তার ব্যবহার করা হয় তার উপরের স্তর প্লাস্টিকের হলেও ভেতরে তামার তার ব্যবহৃত হয়বিশুদ্ধ পদার্থ কি?মিশ্রণ কি?মৌলিক পদার্থ কী?যেসব পদার্থ বিদ্যুৎ ও তাপ পরিবহন করেযৌগিক পদার্থ কাকে বলে?লোহাসেটাই বা কেন?স্টিল

Recent Posts

রোধ, জল, বৃষ্টি। ৬ষ্ঠ শ্রেনী। বিজ্ঞান-অনুশীলন বই

আমরা ষষ্ঠ শ্রেনীর বিজ্ঞান-অনুশীলন বইয়ের ৪র্থ অধ্যায়ে আলোচিত "রোধ, জল, বৃষ্টি"-শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন…

2 months ago

গতির খেলা। ৬ষ্ঠ শ্রেনী। বিজ্ঞান-অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা জানবো ষষ্ঠ শ্রেনীর বিজ্ঞান বিষয়ের ৩য় শিখন অভিজ্ঞতা গতির খেলা  সম্পর্কে। প্রথম, দ্বিতীয় ও…

2 months ago

ক্ষুদে বাগানঃটেরারিয়াম।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৭ম অধ্যায়,ক্ষুদে বাগানঃটেরারিয়াম  সম্পর্কে জানবো। প্রথম ও…

2 months ago

হরেক রকম খেলনার মেলা।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৬ষ্ঠ অধ্যায়,হরেক রকম খেলনার মেলা  সম্পর্কে জানবো।প্রথম…

2 months ago

অদৃশ্য প্রতিবেশী।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৫ম অধ্যায়, অদৃশ্য প্রতিবেশী  সম্পর্কে জানবো।সেশন শুরুর…

2 months ago

সূর্যালোকে রান্না।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর,বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৪র্থ অধ্যায়, সূর্যালোকে রান্না সম্পর্কে জানবো।প্রথম ও দ্বিতীয়…

2 months ago