
এই পোস্টে আমরা জানবো ষষ্ঠ শ্রেনীর বিজ্ঞান বিষয়ের ২য় অভিজ্ঞতা আমাদের জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে।
বিজ্ঞান অর্থ বিশেষ জ্ঞান। ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার ধারাবাহিক, সুশৃঙ্খল,নিয়মতান্ত্রিক গবেষণালব্ধ জ্ঞানভাণ্ডারের নাম বিজ্ঞান।বিজ্ঞানের জ্ঞানকে যখন মানুষের জীবনের প্রয়োজন মেটাতে ব্যবহার করা হয় সেটাকে প্রযুক্তি বলে।
প্রথম ও দ্বিতীয় সেশনঃ
এঁকে ফেলি আমাদের যার যার কল্পনার বিজ্ঞানীকে ঃ
ধাপ-১ঃ প্রয়োজনীয় সামগ্রী: কাগজ, কলম, পেন্সিল, অনুসন্ধানী পাঠ বই, অনুশীলন বই।
কাজের ধারাঃ ক্লাসের সবাই নিজ নিজ কল্পনার বিজ্ঞানীর ছবি খাতায় আঁকি।
ধাপ-২ঃ কাজের ধারাঃ ক্লাসের বন্ধুদের আঁকা ছবি দেখি এবং বিজ্ঞানীদের চেহারা ও পোশাক- আশাকে ফুটে ওঠা বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ করি। অনুসন্ধানী পাঠ্য বইয়ে পড়া বিজ্ঞানীদের সাথে কল্পনার বিজ্ঞানীর মিল খুঁজে বের করি।
নমুনা উত্তরঃ
সত্যিকার বিজ্ঞানীদের মধ্যে কোন কোন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়? | বিজ্ঞানীরদের চাইলেই যে কেউ বিজ্ঞানী হতে পারে যদি বৈজ্ঞানিক মন থাকে।
|
বৈজ্ঞানিক গবেষণা করতে কি সবসময়ই অনেক আধুনিক ল্যাবরেটরি | বৈজ্ঞানিক গবেষণা করতে সবসময়ই অনেক আধুনিক ল্যাবরেটরি বা যন্ত্রপাতি প্রয়োজন |
নমুনা উত্তরঃ
স্যার আইজ্যাক নিউটন ও হরিপদ কাপালীর বৈজ্ঞানিক গবেষনার প্রক্রিয়ার মধ্যে মিল কী কী? | আইজ্যাক নিউটন ও হরিপদ কাপালী দুইজনই তাদের আবিষ্কার প্রথমে প্রমাণ করে দেখেন,এরপর সবাইকে জানান। তাদের বৈজ্ঞানিক গবেষনাতে তারা বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ধাপসমূহ মেনেছেন,এবং যুক্তিযুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণসহ নিজেদের আবিষ্কারকে যাচাই করে দেখান। |
*উপর থেকে একটি হালকা ও ও ভারী বস্তু একসাথে ছেড়ে দিলে কোনটা আগে পরবে?
*এক টুকরা কাগজ আর একটা কলম ছেড়ে দিয়ে নিজেই আগে পরীক্ষা করে দেখো তো?
*পড়ন্ত বস্তুর সূত্রটা কী? তোমার একটু আগের পরীক্ষার ফলাফল কি ছিল ভেবে দেখো তো। সূত্রের সাথে তোমার নিজের অভিজ্ঞতা কি মিলছে?
উত্তরঃ পড়ন্ত বস্তুর একটি সূত্র হলো-“সমান উচ্চতা থেকে বিনা বাধায় পড়ন্ত সকল বস্তু সমান সময়ে ভূমিতে পৌঁছায়।” এখানে বাতাসে বাঁধাকে উপেক্ষা করে হয়েছে।
আমার পরীক্ষার ক্ষেত্রে ভারী কলমটি আগে পড়েছে কারণ বাতাসের উপস্থিতি ছিলো।যদি বায়ুশূন্য স্থানে পরীক্ষা করতে পারতাম তবে সূত্রের সাথে অ্যাম্বার পরীক্ষণের ফলাফল মিলে যেতো।
*পড়ন্ত বস্তুর সূত্র কীভাবে এলো? তুমি কি এই সূত্রের সাথে একমত? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও।
*পূর্বে ব্যবহূত হতো কিন্তু বর্তমানে আর প্রয়োজন পড়ে না এমন ৩টি প্রযুক্তি ও তার ব্যবহার লেখো।
উত্তর: পূর্বে ব্যবহূত হতো কিন্তু বর্তমানে প্রয়োজন পড়ে না এমন ৩টি প্রযুক্তির নাম-
- হারিকেনঃ পূর্বে আলো জ্বালানোর জন্য হারিকেন ব্যবহূত হতো।
- হাতপাখাঃ বাতাস খাওয়ার জন্য হাতপাখা ব্যবহৃত হতো।
- ঢেঁকিঃ ধান ভাঙানোর জন্য ঢেঁকির প্রচলন ছিল।
বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ধাপসমূহ | বিজ্ঞানী হরিপদ কাপালী এই ধাপে যা করেছেন |
১. একটি সমস্যা বা প্রশ্ন ঠিক করা যার সমাধান বা উত্তর বের করতে হবে। | ধান ক্ষেতের কিছু ধানগাছ তুলনামূলক ভাবে কেন বড় হয় এবং ফলন বেশি হয়? |
২. এ সম্পর্কে যা কিছু গবেষণা হয়েছে তা জেনে নেয়া। | বিভিন্ন ধানের গবেষণা সম্পর্কে ধারণা রেখেছে। |
৩. প্রশ্নটির একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দাঁড় করানো। | এই ধানটি বেশি বড় এবং ফলন বেশি দিতে পারে। |
৪. সম্ভাব্য ব্যাখ্যাটি সত্যি কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখা। | যে ধান গুলো ভালো সেগুলো অন্য ধানের সাথে না মিশিয়ে আলাদা করে ফেললেন। বীজগুলো আলাদা করে সেগুলো আবার নতুন করে লাগালেন। এর ফলে সেগুলো বেশ বড় এবং উচ্চ ফলনশীল হলো। |
৫. পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া। | আসলেই এই ধানের জাতটি উচ্চ ফলনশীল। |
৬. সবাইকে ধারণাটি জানিয়ে দেওয়া। | বিজ্ঞানী হরিপদ কাপালীর এই আবিষ্কারের কথা সবাইকে জানা্লেন। এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ধানগুলোকে নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেছিল। |
তৃতীয় সেশনঃ
বিজ্ঞানের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা সরাসরি আমাদের প্রয়োজন মেটাই?
*আমাদের পছন্দের প্রযুক্তিঃ
আমাদের | জীবন |
বিজ্ঞানের | জৈব |
*বিভিন্ন ধরণের প্রযুক্তি কি কি কাজে ব্যবহৃত হয়?
প্রযুক্তির নাম | কি কাজে ব্যবহৃত হয় |
টেলিভিশন | ভিডিও/ছবি দেখা, শব্দ শোনা, বিনোদন ইত্যাদি |
ফ্যান | ঘর ঠান্ডা করার কাজে |
লাইট | ঘর আলোকিত করার কাজে |
মোবাইল ফোন | দূরের মানুষের সাথে কথা বলার কাজে |
ঔষধ | চিকিৎসার কাজে |
ছুরি | কাটার কাজে |
পানির কল | পানির প্রবাহকে নিয়ন্ত্রন করার কাজে |
প্রিন্টার | ছাপানোর কাজে |
বই/খাতা | পড়া/লেখার কাজে |
ঘড়ি | সময় দেখার কাজে |
চেয়ার | বসার কাজে |
চতুর্থ সেশনঃ
*দলের আলোচনায় নতুন যে প্রযুক্তি সম্পর্কে জানলামঃ
প্রযুক্তির নাম | কি কাজে ব্যবহৃত হয় |
রেডিও থেরাপি, ক্যমোথেরাপি | ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় |
আলট্রাসনোগ্রাফি | এর মাধ্যমে রোগ নির্ণয় সহজ হয় |
এক্সরে | রোগ নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয় |
স্যাটেলাইট | আবহাওয়া, যোগাযোগ, প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় |
নিউক্লিয়ার চুল্লী | বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয় |
ই-শিক্ষা | ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা |
ই-স্বাস্থ্য | ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ |
ই-ব্যাংকিং | ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থা |
*তোমাদের তালকার প্রযুক্তিগুলোর ব্যবহার,ভালো-খারাপ দিক শ্রেনীবদ্ধ কর।
প্রযুক্তির নাম | প্রযুক্তিটির বিভিন্ন ব্যবহার | প্রযুক্তিটি ব্যবহারের ফলাফল ভালো | কেন আমরা ভালো বা খারাপ বলছি? |
স্মার্ট ফোন | যোগাযোগ(অডিও/ভিডিও কল), ছবি তোলা, ভিডিও | ভালো ও খারাপ উভয়ই | স্মার্টফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট |
নিউক্লিয়ার প্রযুক্তি | বিদ্যুৎ তৈরি এবং ধ্বংসাত্মক কাজে | ভালো ও খারাপ উভয়ই | বিদ্যুৎ উৎপাদন, জাহাজ সাবমেরিন চালানোর কাজে ব্যবহৃত হয়।নিউক্লিয়ার বোমায় লক্ষ লক্ষ |
পলিথিন ব্যাগ | ব্যাগ হিসেবে ব্যবহৃত হয় | খারাপ | পলিথিন ব্যাগ অপচনশীল ফলে এগুলো |
ই-শিক্ষা | পড়ালেখার কাজে ব্যবহার হয় | ভালো | ঘরে বসেই পড়ালেখা করা যায়। |
ই-ব্যাংকিং | লেনদেন করা যায় | ভালো | ঘরে বসেই ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ |
ই-স্বাস্থ্য | স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ | ভালো | ঘরে বসেই বিশ্বের ভালো ভালো |
পঞ্চম সেশনঃ
ভালো উদ্দেশ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে আমরা কী করতে পারি? | অপ্রয়োজনীয় প্রযুক্তির ব্যবহার, কিংবা প্রযুক্তির অপব্যবহার কমাতে আমাদের কী করার আছে? |
সকল স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযুক্তি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা। | প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা। |
সকলের জন্য প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম এবং রিসোর্সে সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা। | অপ্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক ডিভাইসের উৎপাদন ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা। |
প্রযুক্তির নৈতিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা। | পরিবেশগতভাবে টেকসই প্রযুক্তির ব্যবহারে উৎসাহ প্রদান করা। |
প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা। | জনসাধারণকে প্রযুক্তির অপব্যবহারের সম্ভাব্য ক্ষতি সম্পর্কে অবগত করা। |
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও ডেটা সুরক্ষা রক্ষা করা। | সরকার, বেসরকারি সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। |
প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও গবেষণায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। | প্রযুক্তির দায়িত্বশীল ব্যবহার সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করা। |
প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে অবগত করা। | শিশুদের জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণ করা। অনলাইনে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা এড়ানো। |
তরুণদের মধ্যে প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও নীতিশাস্ত্র সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। | পিতা-মাতা, স্কুল এবং সম্প্রদায়ের উচিত শিশু এবং যুবকদের নৈতিকভাবে এবং দায়িত্বের সাথে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে উৎসাহিত করা। |
সরকার, বেসরকারি সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। | সরকারের উচিত অপ্রয়োজনী প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কঠিন আইন তৈরি করা যা প্রযুক্তির অপব্যবহারকে সীমাবদ্ধ করে। |
*তোমাদের দলের পরিকল্পনা কী ছিল?
উত্তরঃ ব্যানার, পোস্টার, সেমিনার বা আলোচনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অন্যক্লাসের ছাত্রছাত্রী সহ এলাকার মানুষকে প্রযুক্তির ভালো ব্যবহার এবং অপব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করানো ।
*কাজটা করতে গিয়ে তোমার অভিজ্ঞতা কেমন হলো? নতুন কী শিখলে বা জানলে?
উত্তরঃ সহপাঠী এবং শিক্ষকদের সাথে কাজ করায় বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি সম্পর্কে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে। চিকিৎসা, কৃষি, ইলেক্ট্রনিক্স ইত্যাদি প্রযুক্তির বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে ধারনা পেয়েছি।
*বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে এমন কোনো প্রশ্ন মাথায় আছে যার উত্তর এখনো মেলে নি?
উত্তরঃ নিচে লিখে ফেলো তোমার প্রশ্ন, যাতে হারিয়ে না যায়! পরে নিশ্চয়ই কখনো না কখনো এই প্রশ্নগুলোর উত্তর তুমি নিজেই খুঁজে বের করতে পারবে।
১. নিউক্লিয়ার প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে;যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ তৈরি হয় আবার এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বোমা বানিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ মুহুতেই চলে যায়।