Page Contents
Toggleএই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৭ম অধ্যায়,ক্ষুদে বাগানঃটেরারিয়াম সম্পর্কে জানবো।
প্রথম ও দ্বিতীয় সেশনঃ
দলের নামঃ মেঘনা |
||||
নির্বাচিত জীবের নাম (যে কোনো প্রাণি/গাছ) |
এদের আবাসস্থল কেমন? |
এরা কীভাবে বেড়ে ঊঠেছে? |
এরা টিকে থাকতে কী কী মোকাবেলা করে? |
এদের খাদ্য কী? |
পাখি |
গাছপালার উঁচু শাখা–প্রশাখা, বাসাবাড়ির কার্ণিশ, খাঁচা ইত্যাদি জায়গায় খড় কুটা দিয়ে বাসা তৈরি করে বাস করে। |
জন্মের পর মায়ের মুখ থেকে খাবার খায়, বড় হলে নিজের খাবার নিজে সংগ্রহ করে এবং মুক্তভাবে বেড়ে উঠেছে। |
বিভিন্ন ধরনেরপ্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন– ঘূর্ণিঝড়,বন্যা, বাসস্থান ধ্বংস, খাদ্য সংকট, শিকারি ইত্যাদিমোকাবেলা করে টিকে থাকে। |
শস্যদানা, কীটপতঙ্গ,ছোটমাছ ইত্যাদি প্রধান খাদ্য। |
আমগাছ |
উঁচু, আলো– বাতাসপূর্ণ পমি,বাড়ির আঙিনা ইত্যাদি জায়গায় এদের আবাসস্থল |
যৌন ও অযৌন প্রজননের মাধ্যমে বংশধর নতুন সৃষ্টি করে এবং নিজেদের খাদ্য নিজেরা তৈরি করে বেড়ে উঠেছে। |
প্রাকৃতি দুযোর্গ, কীটপতঙ্গ, নদী–ভাঙন,নির্বিচারে বনভূমি ধ্বংসইত্যাদি মোকাবেলা করে টিকে থাকে। |
খনিজ, পানি, পুষ্টি, শর্করা জাতীয় খাদ্য ইত্যাদি। |
তেলাপোকা |
এরা অন্ধকারাচ্ছন্ন,স্যতস্যতে |
এরা যৌন প্রজননের মাধ্যমে বংশধর সৃষ্টি করে। |
প্রায় যে |
হাতের |
গরু |
শুষ্ক, উঁচু স্থানএবং আলো– বাতাস গোয়ালঘর |
জন্মের পর মায়ের দুধ পান করে এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে খড়, কুঁড়া, খৈল, ঘাস, লতাপাতাইত্যাদি খেয়েবেড়ে উঠেছে। |
বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিকদুর্যোগ যেমন– বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, তীব্র খরা ইত্যাদি এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ মোকাবেলা করে টিকে থাকে। |
ছোট গাভীর ক্ষেত্রে খড়, (দুধ), খৈল, ঘাস, কুঁড়া, লতাপাতা, পানি ইত্যাদি। |
জীবদের বেঁচে থাকতে কী কী শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া চালু রাখতে হয় তুমি কী অনুমান করতে পারো?উদ্ভিদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কী একই?
মানুষের সাথে উদ্ভিদের খাদ্যগ্রহন ও শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়া তুলনা কর।
খাদ্য গ্রহনঃ
বৈশিষ্ট্য |
মানুষ |
উদ্ভিদ |
খাদ্যের উৎস |
অন্যান্য জীব |
সালোকসংশ্লেষণ |
খাদ্য |
খাওয়া |
পাতা দিয়ে শোষন |
প্রধান খাদ্য |
প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট,চর্বি |
কার্বোহাইড্রেট |
পরিপাক |
জটিল |
সহজ |
শ্বাস-প্রশ্বাসঃ
বৈশিষ্ট্য |
মানুষ |
উদ্ভিদ |
শ্বাস-প্রশ্বাসের |
ফুসফুস |
রন্দ্র |
গ্রহনকৃত |
অক্সিজেন |
কার্বন ডাই অক্সাইড |
ত্যাগকৃত |
কার্বন ডাই অক্সাইড |
অক্সিজেন |
শ্বাস-প্রশ্বাসের |
শ্বাস-প্রশ্বাস |
বায়ু পরিবহন |
শ্বসন প্রক্রিয়া |
কোষীয় শ্বসন |
কোষীয় শ্বসন |
তৃতীয় ও চতুর্থ সেশনঃ
বদ্ধ টেরারিয়াম (Terrarium) কিভাবে তৈরি করা হয়?
কাজের নাম : বদ্ধ টেরারিয়াম (Terrarium) তৈরি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ : কাচের জার/প্লাস্টিকের বোয়ম, পাথরকুচি, মাটি, মাটির হাঁড়ি ভাঙা, হাড়ের গুঁড়া, কয়লা, মশারির নেট, পানি, মস, আগাছা জাতীয় গুল্ম, শেওলা।
কাজের ধারা :
১. প্রথমে প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ সংগ্রহ করে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নাও। কাচের জার/প্লাস্টিকের বয়াম ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে যাতে ছত্রাক সংক্রমণ না থাকে।
২. কাচের জার/প্লাস্টিকের বয়াম এর নিচে অল্প মাটির হাঁড়ি ভাঙ্গা দাও। মাটির হাঁড়ি ভাঙা, ভালো পানি ধারণ করতে পারে যা টেরারিয়াম (Terrarium) এর আর্দ্রতা বজায় রাখবে।
৩. এবার মাটির হাঁড়ি ভাঙার উপর কিছু পরিমাণ পাথরকুচি দিয়ে দাও।
৪. এরপর তারের জালি/মশারির নেট পাথরকুচির উপর বিছিয়ে দাও। তারের জালি/মশারির নেটের সুবিধা হচ্ছে উপরের মাটি নিচে যেতে পারে না।
৫. তারের জালি/মশারির নেটের উপর আরো কিছু পাথরকুচি বিছিয়ে দিয়ে তার উপর কয়লা গুড়া দাও, যাতে পাতলা একটি স্তর তৈরি হয়।
৬. কয়লা গুঁড়ার পাতলা স্তরের উপর মাটি এমনভাবে দাও, যেন এ স্তরটি একটু পুরু হয়।
৭. টেরারিয়াম (Terrarium) এর সৌন্দর্যের জন্য একটি/দুটি ছোট পাথর, ছোট মরা কাঠের টুকরা সাজিয়ে দাও। এবার কয়েকটি ছোট থানকুনি গাছ মাটিসহ খুব সাবধানে লাগিয়ে দাও। তোমরা চাইলে তোমাদের পছন্দের গাছ লাগাতে পারো।
৮. পুরনো দেওয়াল বা মাটি থেকে সাবধানে মসের আস্তর সংগ্রহ করে টেরারিয়াম (Terrarium) এর উপরিভাগের বাকি ফাঁকা স্থানে বিছিয়ে দাও।
৯. সবশেষে পানি দেবার পালা, সাবধানে পানি এমনভাবে স্প্রে করতে হবে যেন টেরারিয়াম (Terrarium) এর উপরিভাগ ভিজে যায়। ২০ মিনিট পর আবার পানি স্প্রে করে নাও। এবার কাচের জার/প্লাস্টিকের বোয়মের ঢাকনা, ভালোভাবে আটকে দাও।
১০. বেশ! তৈরি হয়ে গেল বদ্ধ টেরারিয়াম (Terrarium)। এটিকে আলোযুক্ত ছায়ায় সংরক্ষণ করতে হবে তবে খেয়াল রাখতে হবে সূর্যের আলো যেন সরাসরি না লাগে।
৫ম ও ৬ষ্ঠ সেশনঃ
ছক-২
টেরারিয়াম এর কোন পরিবর্তন দেখছ? | উদ্ভিদগুলোকে | উদ্ভিদের পাতার রঙ কেমন দেখছ? | বদ্ধ টেরারিয়াম এর উদ্ভিদ টিকে থাকার কারণ কী কী? |
টেরারিয়ামের সংরক্ষণের অবস্থা মোটামুটি সঠিক ছিল। টেরারিয়ামের গ্লাসটি ছিল স্বচ্ছ। সূর্যের আলোর ক্ষতি থেকে বাঁচতে এটিকে আলোযুক্ত ছায়ায় সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। | টেরারিয়ামের উদ্ভিদগুলো আকারে ছোট ছিল এগুলো দেখতে খুবই সুন্দর হয়েছে। যেমন– থানকুনি, মস, শেওলা, বনসাই, ক্যাকটাস ইত্যাদি | উদ্ভিদগুলো আকারে ছোট এবং এদের পাতাগুলোও ছোট ছোট। অধিকাংশ উদ্ভিদের পাতার রঙ সবুজ হলেও কিছু উদ্ভিদের পাতার রঙ রঙিন। যেমন– লাল, কমলা, হলুদ, বেগুনি ইত্যাদি। | বদ্ধ টেরারিয়াম আলোযুক্ত ছায়ায় সংরক্ষণ করতে হয়। অর্থাৎ সূর্যের আলো সরাসরি লাগানো যাবে না। খেয়াল রাখতে হবে যেমন উদ্ভিদ নিজদেহে পানি সংরক্ষণ করতে পারে সেসব উদ্ভিদ নির্বাচন করতে হবে। এ ধরনের টেরারিয়াম ঢাকনা দ্বারা আটকানো থাকে, ঢাকনা সপ্তাহে একবার খুললেই হয়। যখন বানানো হয় এর ভেতরেই নিজস্ব ইকোসিস্টেম তৈরি হওয়ার কারণে এটি বন্ধ অবস্থাতেও ভালোভাবে টিকে থাকে। যেমন: মস ফার্ন, ক্যকটাস ইত্যাদি। |
ছক-৩
প্রশ্ন | তোমাদের উত্তর |
বদ্ধ টেরারিয়াম (Terrarium) এ উদ্ভিদ কিভাবে | বদ্ধ টেরারিয়ামের পরিবেশ থাকে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ও আর্দ্র। এটি বদ্ধ থাকার জন্য ভিতরেই পানি চক্র বিদ্যমান থাকে। এখানে আর্দ্রতা কমে গেলে পানি স্প্রে করতে হয়। টেরারিয়ামের মাটি থেকে উদ্ভিদ পানি শোষণ করে প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় পাতার তৈরি পানি ঘনীভূত হয়ে আবার মাটির আর্দ্রতা ফিরিয়ে দেয়। আলোর সাহায্যে এখানের উদ্ভিদগুলো অক্সিজেন তৈরি করে শ্বসন প্রক্রিয়া চালু রাখে এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপাদন করে। এ কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং পানি ব্যবহার করে বদ্ধ টেরারিয়ামে থাকা উদ্ভিদগুলো সালোকসংশ্লেষণ করে। |
বদ্ধ টেরারিয়াম (Terrarium) এ উদ্ভিদের শ্বাসকার্য সম্পন্ন হয়? | বদ্ধ টেরারিয়ামের উদ্ভিদগুলো আলোর সাহায্যে সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে অক্সিজেন তৈরি করে শ্বসনক্রিয়া চালু রাখে। আর শ্বসনে উৎপন্ন কার্বন ডাইঅক্সাইড আবার ঐ সালোকসংশ্লেষণেই ব্যবহৃত হয়। এভাবেই বদ্ধ টেরারিয়ামে অক্সিজেন চক্র চালু থাকে এবং শ্বাসকার্য সম্পন্ন হয়। |
পরের সেশনে আবার বদ্ধ টেরারিয়াম (Terrarium) দলে পর্যবেক্ষণ করবে। নতুন কোনো পরিবর্তন আছে কি? থাকলে তা দলের সবাই ছক-৪ এ লিখে রাখো
দ্বিতীয় পর্যবেক্ষণে নতুন কী কী পরিবর্তন দেখতে পেলে? |
১। টেরারিয়ামের উদ্ভিদগুলোর দৈহিক বৃদ্ধি ঘটেছে। ২। উদ্ভিদের পাতাগুলো অনেক সবুজ ও সতেজ দেখাচ্ছে। ৩। এখানে বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করা হয়। যেমন– বোতল, জার ইত্যাদি। ৪। এ ধরনের টেরারিয়ামে প্রাণী না থাকলেও উদ্ভিদ শ্বসন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করে সালোকসংশ্লেষণ সম্পন্ন করে। ৫। বাইরের বায়ুর প্রয়োজন হয় না। কারণ ভেতরেই সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে অক্সিজেন তৈরি করে, যা পরবর্তীতে শ্বসনের ব্যবহার করে। ৬। সরাসরি সূর্যলোকের প্রয়োজন পড়ে না। এটিকে আলোযুক্ত ছায়ায় সংরক্ষণ করতে হবে। ৭। বাইরে থেকে পানি দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না এর ভেতরেই পানি চক্র সম্পন্ন হয়। ৮। এখানে আলাদা করে খনিজ উপাদান দেওয়ার দরকার হয় না। ভেতরে ব্যবহৃত উপকরণ ছাড়াই এরা পুষ্টি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে। |
সালোকসংশ্লেষণের জন্য কোন কোন অজৈব উপাদান প্রয়োজন হয়?টেরারিয়ামের ভেতরে এই উপাদানসমূহ কীভাবে তৈরি হচ্ছে ব্যাখ্যা কর।
সালোকসংশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় অজৈব উপাদান: সূর্যালোক,কার্বনডাই অক্সাইড, পানি,খনিজ পদার্থ।
টেরারিয়াম একটি কৃত্রিম বাস্তুতন্ত্র যেখানে সালোকসংশ্লেষণ এবং জৈব-অজৈব চক্রের(যেমন- পানি চক্র,অক্সিজেন চক্র) মাধ্যমে জীবের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরি হয়।
ফিরে দেখাঃ
টেরারিয়ামের মতো কোন বদ্ধ সিস্টেমে কোনো উদ্ভিদ না থেকে মানুষ বা অন্য প্রাণি থাকলে কি বাঁচতে পারবে?ভেবে উত্তর দাও।
As an Amazon Associate I earn from qualifying purchases.
Leave a Reply