Class 8

সবুজ বন্ধু ২০২৪ । বিজ্ঞান-অনুশীলন বই । ৮ম শ্রেনী

এই পোস্টে আমরা অষ্টম  শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বই এর ৩য় শিখন অভিজ্ঞতা– সবুজ বন্ধু- সম্পর্কে জানবো।

প্রথম ও দ্বিতীয় সেশনঃ

গাছ কী সত্যিই আমাদের বন্ধু হতে পারে?

গাছ কেবল বন্ধুই নয়, বরং আমাদের অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য। গাছ আমাদের জীবনে অসংখ্য উপায়ে সাহায্য করে, যার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক:
অক্সিজেন সরবরাহ: গাছ আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অপরিহার্য অক্সিজেন উৎপাদন করে। বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে গাছ অক্সিজেন তৈরি করে, যা আমাদের জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয়।
খাদ্য সরবরাহ: আমরা যে ফল, শাকসবজি, এবং শস্য খাই, তার বেশিরভাগই গাছ থেকে আসে। গাছ আমাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং আমাদের সুস্থ রাখে।
পরিবেশ রক্ষা: গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গাছ বৃষ্টিপাত নিয়ন্ত্রণ করে, মাটির ক্ষয় রোধ করে, এবং বন্যার ঝুঁকি কমায়।
বাসস্থান প্রদান: গাছ অসংখ্য প্রাণী-পাখির বাসস্থান সরবরাহ করে। বন উজাড়ের ফলে প্রাণী-পাখির বাসস্থান হ্রাস পাচ্ছে, যা জীববৈচিত্র্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
ঔষধি গুণ: অনেক গাছের ঔষধি গুণ রয়েছে। গাছ থেকে প্রাপ্ত ঔষধ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
মানসিক প্রশান্তি: গাছের সান্নিধ্য আমাদের মানসিক প্রশান্তি দেয়। গাছের সবুজ রঙ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ আমাদের মনকে প্রশান্ত করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
সৌন্দর্য বর্ধন: গাছ আমাদের পরিবেশকে সুন্দর করে তোলে। গাছের সবুজ পাতা, ফুল, এবং ফল আমাদের চারপাশের পরিবেশকে মনোরম করে তোলে।
অর্থনৈতিক উপকারিতা: গাছ থেকে আমরা কাঠ, কাগজ, এবং অন্যান্য জিনিসপত্র তৈরি করি। গাছ আমাদের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
পরিশেষে বলা যায়, গাছ আমাদের জীবনে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। গাছ আমাদের বন্ধু, সঙ্গী, এবং অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য। আমাদের সকলের উচিত গাছ লাগানো এবং গাছের যত্ন নেওয়া।

গাছ কী সত্যিই শব্দ উৎপন্ন করতে পারে?

বৈজ্ঞানিক জার্নাল ‘সেল’ এ খুব সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষনায় দেখা গেছে গাছ সত্যি সত্যিই শব্দ উৎপন্ন করে। শুধু তাই নয়, সেই শব্দ রেকর্ড করে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গাছ যখন সুস্থ থাকে, ভালো থাকে-মানে হাসিখুশি’ অবস্থায় গাছ যে ধরনের শব্দ তৈরি করে তার চেয়ে কষ্টে থাকা, ক্ষুধার্থ বা তৃষ্ণার্ত গাছের শব্দ একেবারে আলাদা। পাশের ছবিতে খুব সরল করে বিষয়টা দেখানো হয়েছে খেয়াল করো। গাছকে যখন ঠিকমতো পানি দেয়া হচ্ছে না, তার ডাল কেটে ফেলা হচ্ছে, তখন সে বিভিন্ন রকম শব্দ তৈরি করছে। কিন্তু সুস্থ অবস্থায় একই গাছ যে শব্দ তৈরি করছে, বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে এই শব্দ থেকে সেগুলো একেবারে আলাদা! আরও অবাক করা বিষয় কি জানো? এই সূক্ষ্ম শব্দ আমাদের কান পর্যন্ত না পৌঁছুলেও অনেক ছোটো ছোটো প্রাণী যেমন ইঁদুর এই শব্দগুলো ঠিকই শুনতে পায়!

দলীয় কাজঃ ৫/৬ জন করে দলে ভাগ হয়ে একটি করে গাছ রোপন করতে হবে। শিক্ষক নিজেও একটি গাছ রোপন করবেন।

এক্ষেত্রে চারা কিভাবে জোগাড় করবে তা নিশ্চয় সপ্তম শ্রেণির ফসলের ডাক অভিজ্ঞতা’তে জানা হয়েছে।

আজ বাড়ি ফিরে গাছ রোপন করতে গিয়ে তোমার কী অভিজ্ঞতা হলো তা নিচে লিখে রাখো।

গাছ রোপন করতে গিয়ে কিভাবে একটি ভালো চারা বাছাই করতে হয়, কিভাবে টব এবং মাটি প্রস্তুত করতে হয়, কিভাবে গাছের চারা টবে রোপন করতে হয়, এবং পরিচর্যা করতে হয়—-ইত্যাদি জানলাম।

৩য় ও ৪র্থ সেশনঃ

কোষ কী?

কোষ হলো জীবদেহের গঠনগত একক। জীবদেহ ব্যাকটেরিয়া, অ্যামিবা, প্লাজমিডিয়াম এগুলোর মতো এককোষী হতে পারে আবার মানুষ, বটগাছ, তিমি এগুলোর মতো বহুকোষী হতে পারে। এককোষী জীব ছাড়া অন্য সকল জীবদেহ অসংখ্য কোষ দিয়ে তৈরি হয়।

কোষ বিভাজন কী?

প্রতিটি জীব কোষ বিভাজনের মাধ্যমে তাদের বংশবৃদ্ধি ও কোষের সংখ্যাবৃদ্ধি করে থাকে। যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় একটি থেকে একাধিক কোষ তৈরি হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে। কোষ বিভাজন একটি স্বাভাবিক ও গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। কোষ বিভাজনের মাধ্যমে একটি কোষ বিভাজিত হয়ে অসংখ্য কোষ তৈরির মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবে পরিণত হয়। আদি এককোষী জীব সাধারণত যে প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয় তাকে আম্যাইটোসিস বলা হয়। বহুকোষী জীব যে দুটি প্রক্রিয়ায় বিভ্যাজত হয় সেগুলো হাচ্ছে মাইটোসিস এবং মিয়োসিস।

কোষের অভ্যন্তরে নিউক্লিয়াসের ভিতরে ক্রোমোজোমগুলো কিভাবে বিন্যস্ত থাকে?

কোষ ঝিল্লি দিয়ে আবৃত কোষের মূল দুটি উপাদান হচ্ছে সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াস। কোষের কেন্দ্রে ঘন অস্বচ্ছ অঙ্গাণুটি হচ্ছে নিউক্লিয়াস এবং নিউক্লিয়াসের বাইরে অবস্থিত এবং কোষ ঝিল্লি দিয়ে আবৃত বাকি অংশটি সাইটোপ্লাজম। নিউক্লিয়াসটি নিউক্লিয়ার ঝিল্লি দিয়ে আবৃত থাকে এবং তার ভেতরে রয়েছে জীবের বংশগতি পদার্থ DNA দিয়ে তৈরি ক্রোমোজোম। সাধারণ অবস্থায় দীর্ঘ ক্রোমোজোম হিস্টোন নামে প্রোটিন কণার উপর পেঁচিয়ে ক্রোমাটিন হিসেবে উন্মুক্ত জালিকার মতো থাকে বলে এটি আলাদাভাবে বোঝা যায় না। শুধু কোষ বিভাজনের সময় এটি কুণ্ডলী পাকিয়ে সংকুচিত হয় বলে তখন এটি দৃশ্যমান হয়।

তোমার সবুজ বন্ধুর দেহকোষে কি অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজন ঘটে?

সবুজ বন্ধু অর্থাৎ  উদ্ভিদের দেহকোষে অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজন ঘটে না। অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়া প্রাণিকোষের জন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।
উদ্ভিদের দেহকোষে দুটি প্রধান ধরনের কোষ বিভাজন ঘটে:
১. মাইটোসিস:
এই প্রক্রিয়ায়, কোষের নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম দুটি অপত্য কোষে সমানভাবে ভাগ হয়ে যায়। মাইটোসিস দেহকোষে ঘটে এবং উদ্ভিদের বৃদ্ধি, বিকাশ এবং মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয়।
২. মিয়োসিস:
এই প্রক্রিয়ায়, নিউক্লিয়াস দুবার বিভক্ত হয়, ফলে চারটি অপত্য কোষ তৈরি হয়। মিয়োসিস জনন কোষে ঘটে এবং উদ্ভিদের প্রজননের জন্য প্রয়োজনীয়।

অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কিভাবে কোষ বিভাজন ঘটে?

অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজন অত্যন্ত সরল এবং দ্রুত। এটিতে কোন স্পষ্ট পর্যায় (প্রোফেজ, মেটাফেজ, এনাফেজ, টেলোফেজ) অনুসরণ করা হয় না।

অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ার ধাপ:

১. নিউক্লিয়াসের দীর্ঘায়িতকরণ:
প্রথমে, কোষের নিউক্লিয়াস দীর্ঘায়িত হতে শুরু করে।
২. নিউক্লিয়াসের বিভাজন:
এরপর, নিউক্লিয়াস মাঝখানে বিভক্ত হয়।
৩. সাইটোপ্লাজমের বিভাজন:
অবশেষে, সাইটোপ্লাজম দুটি অংশে বিভক্ত হয়, একটি করে অপত্য কোষে।
অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়া প্রাণিকোষে ঘটে, বিশেষ করে নিম্ন শ্রেণীর জীবে, যেমন:
অ্যামিবা,প্যারামিশিয়াম,ইউগলেনা,হাইড্রা,প্ল্যানেরিয়া

মাইটোসিস কি ?মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কিভাবে কোষ বিভাজন ঘটে?

মাইটোসিস প্রক্রিয়া:

মাইটোসিস হলো একটি কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি মাতৃকোষ দুটি অপত্য কোষে বিভক্ত হয়। এই অপত্য কোষগুলি মাতৃকোষের জিনগতভাবে অনুরূপ। মাইটোসিস দেহকোষে ঘটে এবং উদ্ভিদের বৃদ্ধি, বিকাশ এবং মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয়।
মাইটোসিস প্রক্রিয়ার পাঁচটি প্রধান ধাপ রয়েছে:
প্রোফেজঃ
মাইটোসিসের প্রথম ধাপ হলো প্রোফেজ। এই ধাপে মাতৃকোষ প্রতিটি ক্রোমোজোমের একটি অবিকল প্রতিলিপি তৈরি করে বিভাজন প্রক্রিয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। ক্রোমোজোম কুণ্ডলী পাকিয়ে খাটো ও মোটা হতে থাকে, প্রতিটি ক্রোমোজোম তার অনুলিপিসহ সেন্ট্রোমিয়ারে ক্রোমাটিড হিসেবে যুক্ত থাকে।
মেটাফেজঃ
ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ারের সঙ্গে স্পিন্ডল যন্ত্রের তত্ত্ব সংযুক্ত হয়ে ক্রোমোজোমগুলো স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে বিন্যস্ত হয়। ক্রোমাটিড বাহুদুটি মেরুমুখী হয়ে অবস্থান করে।
এনাফেজঃ
ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার বিভক্ত হওয়ার ফলে ক্রোমাটিড’দুটি আলাদা হয়ে পড়ে। ক্রোমোজোমদুটি কোষের মধ্যবর্তী অঞ্চল থেকে বিপরীত মেরুর দিকে যেতে থাকে। তখন ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার অগ্রগামী থাকে এবং ক্রোমাটিড বাহুগুলো তাদের পেছন দিকে থাকে।
টেলোফেজঃ
ক্রোমোজোমগুলো বিপরীত মেরুতে পৌঁছে সরু ও লম্বা আকার ধারণ করে। দুই মেরুতে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস গঠিত হয়।
সাইটোকাইনেসিসঃ কোষের মধ্যবর্তী অংশে উভয়পাশ থেকে দুটি খাঁজ সৃষ্টি হয়। এ খাঁজ ক্রমান্বয়ে গভীর হয়ে মিলিত হয়ে দুটি পরিপূর্ণ অপত্য কোষে বিভক্ত হয়।

পঞ্চম ও ষষ্ঠ সেশনঃ

এবার তোমাদের দলে মাইটোসিস কোষ বিভাজনের বিভিন্ন ধাপের মডেল বানানোর পালা।

উপকরণ – কাগজ/পোস্টার পেপার,মাটি,আটার মন্ড,সুতা,রিবন,চিকন তার,রঙ ইত্যাদি।
তোমাদের জন্য নিচে একটি  ধাপের মডেল নমুনা হিসেবে দেয়া হল। এটির অনুকরনে বাকি ধাপ গুলোর মডেল নিজে বানাবে

মাইটোসিস বিভাজন প্রক্রিয়া যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় সেই বিশৃঙ্খলার মধ্যে কি ঘটবে?

মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াটি জীবের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক প্রভাবক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। জীবের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় অবস্থায় বিভিন্ন প্রভাবকের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির কারণে কোষের অনিয়ন্ত্রিত বিভাজনের ফলে টিউমার সৃষ্টি হয় যা পরবর্তীকালে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে বিভিন্ন রোগজীবাণু, রাসায়নিক পদার্থ কিংবা তেজস্ক্রিয়তা ইত্যাদি অনিয়ন্ত্রিত মাইটোসিস কোষ বিভাজনে বাহ্যিক প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। যকৃত, ফুসফুস, মস্তিষ্ক, স্তন, ত্বক, কোলন এরকম প্রাণিদেহের প্রায় সকল অঙ্গে ক্যান্সার হতে পারে।

মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া কি ?মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় কিভাবে কোষ বিভাজন ঘটে?

মিয়োসিস বিভাজনের এক চক্রে নিউক্লিয়াস দুবার বিভাজিত হয়। প্রথমবারে নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোম সংখ্যায় অর্ধেক হয়ে যায়। এই বিভাজনে মাতৃকোষের যে দুটি নিউক্লিয়াস পাওয়া যায়, দ্বিতীয়বারে তার প্রতিটিই আবার দুটি কোষে বিভাজিত হয়। এবার অবশ্য ক্রোমোজোমের সংখ্যা এবং পরিমাণ সমান থাকে। তাই সব মিলিয়ে চূড়ান্ত ফল হলো, মিয়োসিস বিভাজনে একটি মাতৃকোষ থেকে চারটি অপত্য কোষ পাওয়া যায়, যেগুলোর প্রতিটিই মাতৃকোষের অর্ধেকসংখ্যক ক্রোমোজোম ধারণ করে (কাজেই DNA-এর পরিমাণও হয় প্রায় অর্ধেক)। তাই মিয়োসিসের আরেক নাম হ্রাসমূলক বিভাজন।
মিয়োসিস বিভাজনের সময় একটি কোষ পর পর দুবার বিভাজিত হয়। প্রথম বিভাজনকে প্রথম মিয়োটিক বিভাজন বা মিয়োসিস-১ এবং দ্বিতীয় বিভাজনকে দ্বিতীয় মিয়োটিক বিভাজন বা মিয়োসিস-২ বলে। প্রথম বিভাজনের সময় অ কোষে ক্রোমোজোমের সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেকে পরিণত হয় তাই একে হ্রাসমূলক বিভাজন (Reduction Division) বলে। দ্বিতীয় মিয়োটিক বিভাজনটি মাইটোসিসের অনুরূপ।
প্রথম মিয়োটিক বিভাজন বা মিয়োসিস-১ (First Meiotic Division) প্রথম মিয়োটিক বিভাজনকে চারটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে, যেমন- প্রোফেজ-১, মেটাফেজ-১, অ্যানাফেজ-১ এবং টেলোফেজ-১।

দ্বিতীয় মিয়োটিক বিভাজন বা মিয়োসিস-২ (Second Meiotic Division) একইভাবে দ্বিতীয় মিয়োটিক বিভাজনকে চারটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে, যেমন- প্রোফেজ-২, মেটাফেজ-২, অ্যানাফেজ-২ এবং টেলোফেজ-২।

মাইটোসিস এবং মিয়োসিস কোষ বিভাজনের মধ্যে মূল পার্থক্য কী বলতে পারো?

মাইটোসিস এবং মিয়োসিস কোষ বিভাজনের মধ্যে মূল পার্থক্য  নিম্নরুপঃ
১.মাইটোসিস শরীরের বৃদ্ধি, বিকাশ এবং ক্ষয়প্রাপ্ত কোষ প্রতিস্থাপনের জন্য ঘটে।
মিয়োসিস যৌন প্রজননের জন্য প্রয়োজনীয় যৌন কোষ তৈরির জন্য ঘটে।
২.মাইটোসিস কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করে এবং জিনগতভাবে অভিন্ন কোষ তৈরি করে।
মিয়োসিস কোষের সংখ্যা হ্রাস করে এবং জিনগতভাবে ভিন্ন কোষ তৈরি করে।

সপ্তম ও অষ্ট্ম সেশনঃ

তোমার নিজের রোপন করা গাছের দেহে কি কি অঙ্গ রয়েছে?

উদ্ভিদের নাম-লেবু গাছ
উদ্ভিদের বিভিন্ন অঙ্গের নাম-মূল,কান্ড,পাতা,ফুল,ফল,কুঁড়ি,শাখা-প্রশাখা,বৃন্ত,মূলরোম ইত্যাদি।

নবম ও দশম সেশনঃ

ব্যাপন, অভিস্রবণ, এবং প্রস্বেদন প্রক্রিয়া কী?

ব্যাপন:

একই তাপমাত্রা ও চাপে কোন পদার্থের অধিক ঘন স্থান হতে কম ঘন স্থানে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়াকে ব্যাপন বলে।
উদাহরণ: ঘরে সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়া,পানিতে লবণ দ্রবীভূত হওয়া,ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়া ইত্যাদি।

অভিস্রবণ:

অর্ধভেদ্য পর্দার মাধ্যমে দ্রাবক (পানি) কম ঘন দ্রবণ (পাতলা লবণের দ্রবণ) থেকে বেশি ঘন দ্রবণ (ঘন লবণের দ্রবণ) এ প্রবেশ করার প্রক্রিয়া।
উদাহরণ: শুকনো কিসমিস পানিতে ডুবিয়ে রাখলে কিসমিস ফুলে ওঠে।,গাছের মূল দিয়ে পানি শোষণ প্রক্রিয়া।

প্রস্বেদন:

উদ্ভিদের পাতা থেকে জলীয় বাষ্প বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে প্রস্বেদন বলে।
উদাহরণ: পাতার ছিদ্র (স্টোমাটা) দিয়ে জলীয় বাষ্প বেরিয়ে যাওয়া,ঘাসের পাতা ভেজা থাকা।

এই  প্রক্রিয়াগুলোর কোনটি উদ্ভিদের খাদ্য তৈরি ও গ্রহণ, শ্বাসপ্রশ্বাসে কীভাবে সাহায্য করে বলতে পারো?

সালোকসংশ্লেষণঃ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়াতে উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি করে।
ব্যাপনঃ ব্যাপন প্রক্রিয়া অভিস্রবণ এবং প্রস্বেদন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।
অভিস্রবণঃ অভিস্রবণ প্রক্রিয়া উদ্ভিদের কোষে পানি এবং খনিজ পদার্থ পরিবহন করে,শ্বাস প্রশ্বাসের জন্যে প্রয়োজনীয় পানি শোষণে সাহায্য করে।
প্রস্বেদনঃ প্রস্বেদন প্রক্রিয়া উদ্ভিদের দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয় এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

একাদশ ও দ্বাদশ সেশনঃ

অপুষ্পক উদ্ভিদ ও সপুস্পক উদ্ভিদ কী?

অপুষ্পক উদ্ভিদ- যে সকল উদ্ভিদে কখনো ফুল হয়না,তারাই অপুষ্পক উদ্ভিদ।
সপুষ্পক উদ্ভিদ- যে সকল উদ্ভিদের ফুল এবং বীজ হয় তারাই সপুষ্পক উদ্ভিদ।যেমন- আম,জাম,কাঁঠাল,পাইনগাছ ইত্যাদি। এরা ২টি উপজগৎ এ বিভক্ত:
১.নগ্নবীজী উদ্ভিদ – এদের ফুলের স্ত্রীস্তবকে গর্ভাশয় থাকেনা,তাই ফল তৈরি হয়না।
২.আবৃতবীজী উদ্ভিদ- এদের ফুলে গর্ভাশয় আছে,তাই ফল তৈরি হয়,বীজ ফলের ভেতরে আবৃত থাকে।এদেরকে ২ভাগে ভাগ করা হয়।যথা- একবীজপত্রী ও দ্বিবীজপত্রী  উদ্ভিদ।উদ্ভিদের বীজে একটি বীজপত্র থাকলে একবীজপত্রী এবং ২টি বীজপত্র থাকলে দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ বলে।

দলের সদস্যদের নাম

কি গাছ রোপন করেছে?

কোন শ্রেণিভুক্ত

আকাশ

গোলাপ

সপুষ্পক উদ্ভিদ>আবৃতবীজি উদ্ভিদ > দ্বিবীজপত্রী

সিয়াম

পেঁপে

সপুষ্পক উদ্ভিদ>আবৃতবীজি উদ্ভিদ > একবীজপত্রী

সাদ

মরিচ

সপুষ্পক উদ্ভিদ>আবৃতবীজি উদ্ভিদ > দ্বিবীজপত্রী

সাদি

নিম

সপুষ্পক উদ্ভিদ>আবৃতবীজি উদ্ভিদ > দ্বিবীজপত্রী

ইমন

তুলসী

সপুষ্পক উদ্ভিদ>আবৃতবীজি উদ্ভিদ > দ্বিবীজপত্রী

সাইমন

গাঁদাফুল

সপুষ্পক উদ্ভিদ>আবৃতবীজি উদ্ভিদ > দ্বিবীজপত্রী

রুবেল

মেহেদী গাছ

সপুষ্পক উদ্ভিদ>আবৃতবীজি উদ্ভিদ > দ্বিবীজপত্রী

(উদাহরণ)

শিম গাছ

সপুষ্পক উদ্ভিদ>আবৃতবীজি উদ্ভিদ > দ্বিবীজপত্রী

তোমার বন্ধু গাছটির নিয়মিত পরিচর্যার জন্য তুমি কী কী করে থাকো?

আমি নিয়মিত গাছে পানি দিই,পর্যাপ্ত রোদ যেনো লাগে সেদিকে খেয়াল করি। কিছুদিন পরপর জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করি,পোকামাকড় দমনের জন্য বালাইনাশক ব্যবহার করি।

এই গাছ যত্ন করে বড় করতে গিয়ে তোমার নতুন কী উপলব্ধি হয়েছে?

উত্তর- গাছ আমাদের জন্য একটি উপকারী বন্ধু।পরিবেশ রক্ষায় গাছের ভূমিকা অপরিসীম। গাছকে পর্যাপ্ত পরিমাণে যত্ন নিলে বিনিময়ে গাছ ও আমাদেরকেই বিশুদ্ধ হাওয়া, ছায়া, ফুল ফল দিয়ে বিমোহিত করে।

পুরো শিখন অভিজ্ঞতা শেষে মানুষের সঙ্গে গাছের কী কী মিল খুঁজে পেলে?

উত্তর- মানুষ এবং গাছ উভয়েরই জন্ম এবং মৃত্যু আছে।এছাড়া এরা ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে এবং পরিণত হয়,বংশবিস্তার করতে পারে।বেঁচে থাকার জন্যে খাদ্যের প্রয়োজন হয় এরা উভয়ে একে অপরের উপকারী বন্ধু হয়ে পৃথিবীতে বসবাস করছে।

As an Amazon Associate I earn from qualifying purchases.

veg_admin

Share
Published by
veg_admin

Recent Posts

রোধ, জল, বৃষ্টি। ৬ষ্ঠ শ্রেনী। বিজ্ঞান-অনুশীলন বই

আমরা ষষ্ঠ শ্রেনীর বিজ্ঞান-অনুশীলন বইয়ের ৪র্থ অধ্যায়ে আলোচিত "রোধ, জল, বৃষ্টি"-শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন…

2 months ago

গতির খেলা। ৬ষ্ঠ শ্রেনী। বিজ্ঞান-অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা জানবো ষষ্ঠ শ্রেনীর বিজ্ঞান বিষয়ের ৩য় শিখন অভিজ্ঞতা গতির খেলা  সম্পর্কে। প্রথম, দ্বিতীয় ও…

2 months ago

ক্ষুদে বাগানঃটেরারিয়াম।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৭ম অধ্যায়,ক্ষুদে বাগানঃটেরারিয়াম  সম্পর্কে জানবো। প্রথম ও…

2 months ago

হরেক রকম খেলনার মেলা।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৬ষ্ঠ অধ্যায়,হরেক রকম খেলনার মেলা  সম্পর্কে জানবো।প্রথম…

2 months ago

অদৃশ্য প্রতিবেশী।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৫ম অধ্যায়, অদৃশ্য প্রতিবেশী  সম্পর্কে জানবো।সেশন শুরুর…

2 months ago

সূর্যালোকে রান্না।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর,বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৪র্থ অধ্যায়, সূর্যালোকে রান্না সম্পর্কে জানবো।প্রথম ও দ্বিতীয়…

2 months ago