বিজ্ঞান class 9

বায়ু দূষণ ২০২৪| ৯ম শ্রেণী | বিজ্ঞান অনুশীলন বই

পানি যেমন আমাদের জীবন ধারণের অপরিহার্য একটি উপাদান, বাতাস ও কিন্তু তাই। আমরা বাতাসের মধ্যেই বসবাস করি, ক্রমাগত নিঃশ্বাস নেই।.দেখতে না পেলেও, বাতাসের প্রবাহ কিন্তু আমরা ঠিকই অনুভব করি। ঝড়ের সময় আমরা টের পাই অদৃশ্য বাতাসের দানবীয় শক্তি। আচ্ছা, বাতাসেরও কি দূষণ হতে পারে???

নবম শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের শিখন অভিজ্ঞতা– বায়ু দূষণ’- এর মধ্য দিয়ে আমরা পদার্থের অবস্থা,কণার গতিতত্ব,ব্যাপন,নিঃসরণ,পরমাণুর মডেল, ইলেক্ট্রন বিন্যাস, আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর,পর্যায় সারণি,মৌলের পর্যায়ভিত্তিক ধর্ম, রাসায়নিক বন্ধন,ধাতু নিষ্কাশন ইত্যাদি  সম্পর্কে জানবো।

প্রথম ও দ্বিতীয় সেশনঃ

ক্রমিক নং

দলের সদস্যের নাম

এলাকার কোথায় নিঃশ্বাস নিতে ভালো লাগে

এলাকার কোথায় নিঃশ্বাস নিতে খারাপ লাগে

কোনো বিশেষ সাদৃশ্য বা বৈসাদৃশ্য

হামিম

নার্সারী
এলাকা

বন্দর এলাকা

নার্সারী
এলাকা শান্ত; বন্দর এলাকা কোলাহলপূর্ণ

সোহান

উন্মুক্ত স্থান
যেমন খেলার মাঠ

শিল্প এলাকা

উন্মুক্ত স্থাণের
বায়ু শিল্প এলাকার চেয়ে পরিষ্কার

আলভী

গাছপালা সমৃদ্ধ
এলাকা

মহাসড়ক

মহাসড়কে মানসিক
চাপ বেশী

আকাশ

জলাশয় যেমন
পুকুর

ডাস্টবিনের
স্তুপ

ডাস্টবিনের আশেপাশের
পরিবেশের বায়ু অপরিচ্ছন্ন

সাদী

স্কুল
ক্যাম্পাস

খাল বা নদীর তীরে

দু’টো যায়গায়ই   শান্ত পরিবেশ থাকতে পারে

যেসব স্থানে শ্বাস নিতে আরাম লেগেছে সেখানে বিশেষ কি আছে?

পরিষ্কার বায়ু,পরিষ্কার জল, উর্বর মাটি, শান্ত পরিবেশ, পরিবেশের উপর ইতিবাচক প্রভাব ইত্যাদি। 

যেসব স্থানে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় সেখানের বিশেষ কি বৈশিষ্ট্য আছে?

বায়ু দূষন, পানি দূষন, মাটি দূষন, শব্দ দূষন, মানব স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ইত্যাদি।

তৃতীয়,চতুর্থ পঞ্চম সেশনঃ

যে অঞ্চলে বাতাস দূষিত সেখানে মানুষের কী কী অসুবিধা হচ্ছে?

  • শ্বাসকষ্ট, হাপানি,কাশি,ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়ার মত রোগ সৃষ্টি করে।
  • এজমা আক্রমণের শংকা বাড়ায়।ফুসফুসের ক্যান্সার,হৃদরোগ, রক্তজমাট বাঁধা ইত্যাদি রোগের ঝুকি বাড়ায়।
  • ত্বকের সমস্যা,চোখের সমস্যা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি করে।
  • গর্ভকালিন জটিলতা এবং শিশুদের বিকাশে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে।
  • এছাড়াও মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বিষন্নতার মত মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা তৈরী করতে পারে।

উদ্ভিদ ও প্রাণি,মানবস্বাস্থ্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বায়ু দূষণের প্রভাবঃ

 

বায়ু দূষনের ফলাফল

মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব

শ্বাসকষ্ট, হাপানি,কাশি,ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়ার মত রোগ সৃষ্টি করে।এজমা আক্রমণের শংকা বাড়ায়। ফুসফুসের ক্যান্সার,হৃদরোগ, রক্তজমাট বাঁধা ইত্যাদি রোগের ঝুকি বাড়ায়।ত্বকের সমস্যা,চোখের সমস্যা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি করে।গর্ভকালিন জটিলতা এবং শিশুদের বিকাশে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বিষন্নতার মত মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা তৈরী করতে পারে।

অন্যান্য উদ্ভিদ ও প্রাণির উপর প্রভাব

উদ্ভিদের উপর প্রভাবঃ উদ্ভিদের বৃদ্ধি ব্যহত হয়।ফুল ও ফলের বিকাশে বাঁধা সৃষ্টি করে, ফলে ফলন কমে যায়। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া ব্যহত হয় এবং পাতা ঝরতে পারে।

প্রাণীর উপর প্রভাবঃ প্রাণীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস করতে পারে। প্রাণীর বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর প্রভাব

গ্রিন হাউস গ্যাস বৃদ্ধি পায়, ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এসিড বৃষ্টি তৈরি হয়। এটি বন,জলাশয় এবং মাটির ক্ষতি হয়।ওজোন স্তর ক্ষয় করে।জীববৈচিত্র্য হ্রাস পায়।

পরীক্ষনঃ পানিতে চা’পাতার রং ছড়িয়ে পরা।

 

টি ব্যাগ ডোবানোর সাথে সাথে

১ মিনিট পর

২ মিনিট পর

৫ মিনিট পর

পানির রং

পানির কিছু অংশ হালকা বাদামী

হালকা বাদামী

গাঢ় বাদামী

গাঢ় বাদামী বা কালচে

 

বেলুনের বাতাস বের হয়ে যাওয়ার গতি

        কারণ ব্যাখ্যা

সাধারণ অবস্থায় বেলুন ফুটো করলে

দ্রুত

বেলুনের ভেতরে বাতাসের চাপ বাইরের বাতাসের চাপের চেয়ে বেশি থাকে ফলে, যখন বেলুনে ফুটো হয়, তখন বেলুনের ভেতরের উচ্চচাপের বাতাস দ্রুত বাইরের নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হয়

বেলুনের ভেতরের বাতাসের অণুগুলো গতিশীল থাকে ফলে, ফুটো দিয়ে বের হওয়ার সময় তাদের গতি আরও বৃদ্ধি পায়

স্কচটেপ লাগিয়ে তার ওপরে বেলুন ফুটো করলে

ধীরে

বেলুনে স্কচটেপ লাগিয়ে তার উপরে বেলুনে ফুটো করলে বাতাস বের হয়ে যাওয়ার গতি ধীর হওয়ার কারণ হলো স্কচটেপের প্রতিরোধ ক্ষমতা স্কচটেপ বেলুনের ছিদ্রটিকে পুরোপুরি বন্ধ করে না, বরং ছিদ্রের চারপাশে একটি পাতলা আবরণ তৈরি করে এই আবরণ বাতাসের প্রবাহকে বাধা দেয়, ফলে বাতাস ধীরে ধীরে বের হয়এক্ষেত্রে বেলুনটি ফেটে যায়না,চুপসে যায়

বাতাসে সুগন্ধ বা দুর্গন্ধ ছড়ানোর সাথে এই দুইটি ঘটনার কোনটির মিল পাওয়া যায়?

বাতাসে সুগন্ধ বা দুর্গন্ধ ছড়ানোর সাথে পানিতে চাপাতার রং ছড়িয়ে পড়ার ঘটনার সাথে মিল রয়েছে।দুটো ঘটনাতেই ব্যাপন ঘটে।

বাতাস দূষিত হয় কোন প্রক্রিয়ায়?দূষণকারী পদার্থ কীভাবে ছড়ায়?তরল ও কঠিন পদার্থেও কি একইভাবে দূষণ ঘটে?

উত্তর: ১।যানবাহন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কলকারখানা, এবং ঘরে জ্বালানী (যেমন কাঠ, কয়লা, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস) পোড়ানোর ফলে বায়ুদূষণ ঘটে।
২।কলকারখানা থেকে নির্গত বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ, ধোঁয়া, এবং ধুলোবালি বাতাস দূষণের অন্যতম কারণ।
৩।রাসায়নিক সার, কীটনাশক, এবং জৈব সার ব্যবহারের ফলে বাতাসে বিষাক্ত পদার্থ ছড়িয়ে পড়ে।
৪।আগ্নেয়গিরি, বন্যা, এবং ঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাতাস দূষণের কারণ হতে পারে।
৫।বন উজাড়ের ফলে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়।
দূষণকারী পদার্থের ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়া:
বাতাসে ছড়িয়ে পড়া দূষণকারী পদার্থ বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
বায়ুপ্রবাহ: বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে দূষণকারী পদার্থ দীর্ঘ দূরত্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বৃষ্টিপাত: বৃষ্টির মাধ্যমে দূষণকারী পদার্থ মাটিতে জমা হতে পারে।
অবক্ষেপণ: ধুলোবালি এবং অন্যান্য কণা মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে মাটিতে জমা হতে পারে।
তরল ও কঠিন পদার্থে দূষণ:
তরল ও কঠিন পদার্থেও দূষণ ঘটতে পারে। তরল পদার্থে দূষণ ঘটে যখন তরল পদার্থে বিষাক্ত পদার্থ মিশে যায়। কঠিন পদার্থে দূষণ ঘটে যখন কঠিন পদার্থের উপরে বিষাক্ত পদার্থ জমা হয়।
তরল পদার্থে দূষণের উদাহরণ:
  • কলকারখানার বর্জ্য পানি নদীতে ফেলা,
  • কৃষি ক্ষেত থেকে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ধুয়ে নদীতে চলে যাওয়া,
  • পয়ঃনিষ্কাশনের অব্যবস্থা ইত্যাদি।
কঠিন পদার্থে দূষণের উদাহরণ:
  • প্লাস্টিকের স্তর
  • ইলেকট্রনিক বর্জ্য
  • বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি।

পদার্থের এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তন কীভাবে ঘটে?

উত্তর: পদার্থের এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তন তাপমাত্রা এবং চাপের পরিবর্তনের মাধ্যমে ঘটে। তাপমাত্রা এবং চাপের পরিবর্তন কণার গতিশক্তি এবং আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তিকে প্রভাবিত করে, যার ফলে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে।পদার্থের অবস্থা পরিবর্তনের বিভিন্ন প্রক্রিয়া আছেযেমন: গলন,স্ফুটন,ঘনীভবন,হিমায়ন,উর্ধ্বপাতন ইত্যাদি।

গলন,স্ফুটন, পাতন,ঊর্ধ্বপাতন প্রক্রিয়া বলতে কী বুঝ?

গলন, স্ফুটন, পাতন, এবং ঊর্ধ্বপাতন প্রক্রিয়া:
গলন: তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া। উদাহরণস্বরূপ, বরফ গলে জলে পরিণত হয়।
স্ফুটন: তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে তরল পদার্থ গ্যাসে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া। উদাহরণস্বরূপ, জল ফুটে বাষ্পে পরিণত হয়।
পাতন: তরল পদার্থের মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলোকে বাষ্পীভবন এবং ঘনীভবন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আলাদা করার প্রক্রিয়া। উদাহরণস্বরূপ, লবণাক্ত জল থেকে পানি পাতন করে লবণ আলাদা করা।
ঊর্ধ্বপাতন: তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে কঠিন পদার্থ সরাসরি গ্যাসে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া।এক্ষেত্রে কঠিন পদার্থকে তাপ দিলে তা তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়। উদাহরণস্বরূপ, শুকনো বরফ,কঠিন ন্যাপথালিন ইত্যাদি পদার্থকে তাপ দিলে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়।

ষষ্ঠ সেশনঃ

কোন কোন পদার্থ বায়ুতে থাকলে বায়ু দূষিত হয়? এসব পদার্থের ধরন কেমন?

বায়ু দূষনকারী পদার্থ

পদার্থের ধরন

ক্ষুদ্র বস্তুকণা (PM)

বায়ু দূষণের অন্যতম উপাদান, যার সাথে অনেক স্বাস্থ্যঝুঁকি জড়িত এসব বস্তুকণায় বিভিন্ন উপাদান পাওয়া যায়; যেমন সালফেট নাইট্রেট যৌগ, অ্যামোনিয়া, সোডিয়াম ক্লোরাইড, কার্বন, ধূলিকণা এবং জলীয় বাষ্প

কার্বন মনোক্সাইড (CO)

বর্ণহীন, স্বাদহীন, গন্ধহীন বিষাক্ত গ্যাস; মূলত কার্বনভিত্তিক ফুয়েল (যেমন: কাঠ, পেট্রোল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, কেরোসিন ইত্যাদি) পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন হয়

নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড (NO2)

মূলত যানবাহনের ধোঁয়া এবং শিল্প কারখানা থেকে উৎপন্ন হয় এই ক্ষতিকর গ্যাস

সালফার ডাই অক্সাইড (SO2)

বর্ণহীন কিন্তু কড়া ঘ্রাণযুক্ত গ্যাসসাধারণত ফসিল ফুয়েল পোড়ানোর ফলে বাতাসে মেশে

পরমাণুর বিন্যাস সম্পর্কে রাদারফোর্ডের মডেলের মুল ধারণা কী?

.পরমাণুর কেন্দ্রে একটি ধনাত্মক চার্জযুক্ত ক্ষুদ্র কেন্দ্র থাকে,রাদারফোর্ড যার নাম দেন নিউক্লিয়াস এই নিউক্লিয়াসে প্রোটন এবং নিউট্রন থাকেপরমাণুর অধিকাংশ জায়গাই ফাঁকা

. ইলেকট্রন, যা ঋণাত্মক চার্জযুক্ত কণা, নিউক্লিয়াসের চারদিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘোরে।

সৌরজগতে যেমন সূর্যকে কেন্দ্র করে গ্রহগুলো ঘুরে তেমনি নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কক্ষপথে ইলেকট্রনগুলো ঘুরতে থাকে নিউক্লিয়াস এবং ইলেকট্রনের মধ্যে আকর্ষণ বল কাজ করে, যা পরমাণুকে স্থিতিশীল রাখে

 

পরমাণুর বিন্যাস সম্পর্কে বোরের মডেলের মুল ধারণা কী?

১.পরমাণুতে থাকা ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ইচ্ছেমতো যে কোনো কক্ষপথে ঘুরতে পারে না, শুধু নির্দিষ্ট ব্যাসার্ধের কতগুলো অনুমোদিত বৃত্তাকার কক্ষপথে ঘুরে থাকে। এদেরকে প্রধান শক্তিস্তর বলে,যা n দ্বারা প্রকাশ করা হয়।এই স্থিতিশীল কক্ষপথে ঘোরার সময় ইলেকট্রনগুলো কোনো শক্তি শোষণ বা বিকিরণ করে না।

২. শক্তিস্তরে ইলেকট্রনের স্থানান্তরের ফলে  শক্তি শোষিত বা বিকিরিত হয়। এই শোষিত বা বিকিরিত শক্তির পরিমাণ, দুটি শক্তিস্তরের (E1, E) শক্তির

মধ্যে পার্থক্যের সমান এবং এটি প্লাঙ্কের সমীকরণ দ্বারা নির্ধারিত হয়। সমীকরণটি এরকম :

ΔΕ = E – E1 = hυ

এই দুই মডেলের মূল পার্থক্য কোথায়?

রাদারফোর্ডের মডেল পরমাণুর কেন্দ্রীয় কাঠামো সম্পর্কে ধারণা দান করে, যেখানে বোরের মডেল ইলেকট্রনের কক্ষপথ এবং শক্তিস্তর এবং বর্ণালী সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে।

সপ্তম ও অষ্টম সেশনঃ

পরমাণুতে ইলেক্ট্রন কিভাবে বিন্যাস্ত থাকে?

পরমাণুতে ইলেকট্রন বিন্যাস :

পরমাণুতে নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে যে শক্তিস্তরে ইলেকট্রন ঘুরে তাকে প্রধান শক্তিস্তর বলে, একে n দ্বারা প্রকাশ করা হয় n = 1,2,3,4 ইত্যাদি

প্রত্যেকটি প্রধান শক্তি স্তরের সর্বোচ্চ ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা হলো 2n2

n= 1, হলে ১ম কক্ষপথে সর্বোচ্চ( 2*12=2) টি ইলেকট্রন থাকতে পারেঅনুরূপভাবে ২য়,৩য়, ৪র্থ শক্তিস্তরে ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা হবে ,১৮,৩২টি

দলীয় কাজঃ পরমাণুর ইলেক্ট্রন বিন্যাস বের কর।

তোমাদের কাজের সুবিধার্থে নিচে ১-৩০ পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট মৌলের ইলেক্ট্রন বিন্যাস দেয়া হলোঃ

পারমাণবিক সংখ্যা

মৌল

    n= 1

      K

সর্বোচ্চ 2 টি ইলেক্ট্রন

    n= 1

      L

সর্বোচ্চ 8 টি ইলেক্ট্রন

    n= 1

      M

সর্বোচ্চ 18 টি ইলেক্ট্রন

    n= 1

      N

সর্বোচ্চ 32 টি ইলেক্ট্রন

1

H

1

 

 

 

2

He

2

 

 

 

3

Li

2

1

 

 

4

Be

2

2

 

 

5

B

2

3

 

 

6

C

2

4

 

 

7

N

2

5

 

 

8

O

2

6

 

 

9

F

2

7

 

 

10

Ne

2

8

 

 

11

Na

2

8

1

 

12

Mg

2

8

2

 

13

Al

2

8

3

 

14

Si

2

8

4

 

15

P

2

8

5

 

16

S

2

8

6

 

17

Cl

2

8

7

 

18

Ar

2

8

8

 

19

K

2

8

8

1

20

Ca

2

8

8

2

21

Sc

2

8

9

2

22

Ti

2

8

10

2

23

V

2

8

11

2

24

Cr

2

8

13

1

25

Mn

2

8

13

2

26

Fe

2

8

14

2

27

Co

2

8

15

2

28

Ni

2

8

16

2

29

Cu

2

8

18

1

30

Zn

2

8

18

2


উপশক্তিস্তরের ধারণা ঃ

প্রধান শক্তিস্তরগুলো (n) কিছু উপশক্তিস্তরে বিভক্ত থাকে এবং এই উপশক্তিস্তরকে ইংরেজি l বর্ণ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। l এর মান  0 থেকে n – 1 পর্যন্ত হয়ে থাকে। উপশক্তিস্তরকে অরবিটাল (orbital) বলে। এই উপশক্তিস্তর বা অরবিটালগুলোর 0, 1, 2, 3… মান এই সংখ্যাগুলো ছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে এবং এরা s, p, d, এবং f নামে পরিচিত।

এখানে n = 1 হলে l এর একটি মাত্র মান হওয়া সম্ভব, সেটি হচ্ছে n-1 =(1-1) = 0; এক্ষেত্রে অরবিটাল হবে ১টি এবং সেটি হবে 1s.

n = 2 হলে l এর সর্বোচ্চ মান হচ্ছে n-1 = (2-1) = 1; কাজেই এবারে l এর দুটি মান হতে পারে, l = 0, এবং l = 1 অর্থাৎ অরবিটাল হবে ২টি, এবং সেই অরবিটাল দুটি হচ্ছে 2s 2p

n = 3 হলেএর সর্বোচ্চ মান হচ্ছে n-1 = (3-1) = 2; কাজেই এবারে l এর তিনটি মান হতে পারে, l = 0, 1 এবং 2 অর্থাৎ অরবিটাল হবে তিনটি, এবং সেই অরবিটাল তিনটি হচ্ছে 3s, 3p 3d । এভাবে আমরা দেখাতে পারি, n = 4 হলে l = 0, 1, 2, 3 হবে; এক্ষেত্রে অরবিটাল হবে ৪টি এবং সেগুলো হচ্ছে 4s, 4p, 4d, 4f.

প্রতিটি অরবিটালে সর্বোচ্চ ২টি করে ইলেকট্রন থাকতে পারে,
s অরবিটে ২টি,p অরবিটে ৬টি,d অরবিটে ১০টি, f অরবিটে ১৪টি ইলেকট্রন থাকতে পারে।

ইলেকট্রন বিন্যাসের নীতি (আউফবাউ নীতি) কী?

ইলেকট্রন বিন্যাসের নীতিঃ ইলেকট্রন প্রথমে সর্বনিম্ন শক্তির অরবিটাল পূর্ণ করবে, পরবর্তী কালে ক্রমান্বয়ে উচ্চশক্তির অরবিটাল পূর্ণ করতে শুরু করবে। আরও সহজভাবে বললে বলা যায়, যে অরবিটালের শক্তি কম (lower energy), সেই অরবিটালে ইলেকট্রন আগে প্রবেশ করবে এবং যে অরবিটালের শক্তি অপেক্ষাকৃত বেশি, সে অরবিটালে পরে প্রবেশ করবে।
অরবিটালের শক্তি বের করার সূত্র হলো- (n+l)
যে অরবিটালের (n+l) এর মান কম সে অরবিটালের শক্তি কম,যে অরবিটালের  ( n+l) এর মান বেশি সে অরবিটালের শক্তি বেশি।
দুটি অরবিটালের শক্তির মান একই হলে যে অরবিটালের n এর মান কম সেই অইবিটালে ইলেক্ট্রন আগে প্রবেশ করবে।

ইলেকট্রন বিন্যাসের ব্যাতিক্রম ঃ ভাবনার খোরাক

ব্যাতিক্রমধর্মী ইলেক্ট্রন বিন্যাসঃ

Cu (29)     1s2      2s2    2p6     3s2     3p6     4s1     3d10

Cr (24)     1s2      2s2    2p6     3s2     3p6     4s1     3d5

একই উপশক্তিস্তর যেমন- p কিংবা d অরবিটালগুলো অর্ধেক পূর্ণ (উদাহরণ: p3, d5) না হয়ে যদি সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ (উদাহরণ: p6, d10) হয়, তাহলে সেই ইলেকট্রন বিন্যাস বেশি স্থিতিশীল (stable) হয়ে থাকে।

নবম ও দশম সেশনঃ

পারমাণবিক ভর ও আপেক্ষিক পারমাণবিক ভরের পার্থক্য কি?

একটি পরমাণুর ভর বা পারমাণবিক ভর বলতে ঐ পরমাণুতে অবস্থিত  ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রনের ভরের সমষ্টি বুঝায়।
অপরদিকে, কার্বন-১২ পরমাণুর ভরের ১/১২ অংশের সাথে যেকোনো মৌলের এক পরমাণুর গড় ভরের অনুপাতকে আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর বলে।

পার্থক্য –

★পারমাণবিক ভর ব্যবহার করে আমরা কোনো মৌলের পরমাণুর ভর নির্ণয় করতে পারি।এটি নির্দিষ্ট।
★আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর ব্যবহার করে আমরা কোনো মৌলের পরমাণুর ভরকে কার্বন-১২ আইসোটোপের ভরের সাথে তুলনা করতে পারি।
রাসায়নিক বিক্রিয়ার স্টোইকিওমেট্রি নির্ণয়ের জন্য আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর ব্যবহার করা হয়।এটি আপেক্ষিক।
সর্বোপরি, পারমাণবিক ভর হলো কোনো পরমাণুর প্রকৃত ভর, যেখানে আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর হলো কার্বন-১২ আইসোটোপের ভরের সাথে তুলনামূলক ভর।

প্রকৃতিতে কপারের দুটি আইসোটোপ হচ্ছে  63Cu এবং 65Cu এবং তার গড় আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর হচ্ছে 63.5 তুমি কি 63Cu এবং 65Cu –এর প্রকৃতিতে প্রাপ্ত শতকরা পরিমাণ বের করতে পারবে?

হ্যাঁ, আমি 63Cu  এবং 65Cuএর প্রকৃতিতে প্রাপ্ত শতকরা পরিমাণ বের করতে পারবো

প্রথমে, আমরা নিম্নলিখিত সমীকরণটি ব্যবহার করবো:

গড় পারমাণবিক ভর = (আইসোটোপ 1 এর ভর * আইসোটোপ 1 এর শতকরা পরিমাণ) + (আইসোটোপ 2 এর ভর * আইসোটোপ 2 এর শতকরা পরিমাণ) / 100

 

গড় পারমাণবিক ভর = (pm+qn)/100

এখানে,

  • গড় পারমাণবিক ভর = 63.5
  • আইসোটোপ 1 = 63Cu
  • আইসোটোপ 2 = 65Cu
  • আইসোটোপ 1 এর ভর m = 62.9295 u
  • আইসোটোপ 2 এর ভর n = 64.9277 u
  • আইসোটোপ 1 এর শতকরা পরিমাণ p = x
  • আইসোটোপ 2 এর শতকরা পরিমাণ q= 100 – x

এখন, আমরা সমীকরণটিতে মানগুলি প্রতিস্থাপন করবো:

63.5 = (62.9295 * x) + (64.9277 * (100 – x)) / 100

এই সমীকরণটি সমাধান করলে আমরা পাই:   x = 71.44%

অতএব,

63Cu –এর শতকরা পরিমাণ = 71.44%

65Cu –এর শতকরা পরিমাণ = 100 – 71.44 = 28.56%

সুতরাং, 63Cuএর প্রকৃতিতে প্রাপ্ত শতকরা পরিমাণ 71.44% এবং 65Cuএর প্রকৃতিতে প্রাপ্ত শতকরা পরিমাণ 28.56%

৩টি আইসোটোপ রয়েছে এরকম একটি মৌলের গড় আপেক্ষিক  পারমাণবিক ভর যদি তুমি জানো তাহলে কি তুমি তাদের প্রকৃতিতে প্রাপ্ত শতকরা পরিমাণ বের করতে পারবে?

গড় পারমাণবিক ভর = (pm+qn+ro)/100 

এখানে p,q,r হলো যথাক্রমে ৩টি আইসোটোপের শতকরা পরিমাণ এবং m,n,o হলো আইসোটোপ ৩টির ভর।

এই সূত্রে মান বসিয়ে প্রকৃতিতে প্রাপ্ত আইসোটোপের শতকরা পরিমাণ বের করতে পারব।

১১শ ও ১২শ সেশনঃ

আপেক্ষিক আণবিক ভর কিভাবে বের করা হয়?

আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর ব্যবহার করে অণুর ভর বের করা হলে তাকে আপেক্ষিক আণবিক ভর বলা হয়। অর্থাৎ অণুর ভেতর যে পরমাণুগুলো রয়েছে সেই পরমাণুগুলোর আপেক্ষিক পারমাণবিক ভরকে পরমাণু সংখ্যা দিয়ে গুণ করে প্রাপ্ত গুণফলগুলোকে যোগ করে অণুর আপেক্ষিক আণবিক ভর বের করা হয়।
উদাহরণ: CO₂-এর আপেক্ষিক আণবিক ভর কত?
সমাধান : CO₂, অণুতে রয়েছে 1টি কার্বন (C) ও 2টি অক্সিজেন (০) পরমাণু। কার্বন পরমাণুর আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর 12 এবং অক্সিজেন পরমাণুর আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর 16। কাজেই CO₂ -এর আপেক্ষিক আণবিক ভর হচ্ছে 12 + 2 x 16 = 44

১৩শ,১৪শ,১৫শ ও ১৬শ সেশনঃ

পর্যায় সারণি কী?

পর্যায় সারণি হলো রাসায়নিক মৌলগুলোকে তাদের পারমাণবিক সংখ্যা, ইলেকট্রন বিন্যাস এবং রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সাজানো একটি ছক। এটি রসায়নের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ এটি আমাদের মৌলগুলোর বৈশিষ্ট্য বুঝতে এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার পূর্বাভাস পেতে   সাহায্য করে।

পর্যায় সারণিতে মৌলের অবস্থান নির্ণয় কিভাবে করবে?

উত্তর-  পর্যায় নির্ণয়:
পর্যায় সারণিতে কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসের সবচেয়ে বাইরের শক্তিস্তরের নম্বরই  হচ্ছে ঐ মৌলটির পর্যায় নম্বর। যেমন-  লিথিয়াম(Li) এর ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে দেখা যায় এর বাইরের শক্তিস্তর হলো ২।তাই এটি ২য় পর্যায়ের মৌল।
Li (3) →    1s2 2s1
গ্রুপ নির্ণয় :
নিয়ম ১: কোন মৌলের ইলেকট্রন  বিন্যাসের বাইরের প্রধান শক্তি স্তরে শুধু s অরবিটাল থাকে তাহলে s অরবিটালের মোট ইলেকট্রন সংখ্যায় হচ্ছে মৌলটির গ্রুপ নম্বর।  যেমন – লিথিয়াম গ্রুপ ১ এর মৌল।
Li (3) → 1s2 2s1
নিয়ম ২ : কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসের বাইরের প্রধান শক্তিস্তরে s ও p অরবিটাল থাকলে ঐ অরবিটালদ্বয়ে  থাকা মোট ইলেকট্রনের সাথে ১০ যোগ করলে  যে সংখ্যা পাওয়া যাবে সেই সংখ্যাটিই হবে ওই মৌলের গ্রুপ নাম্বার।

B (5) → 1s2      2s2    2p1     

সুতরাং, বোরনের গ্রুপ নম্বর হবে (2+1+10)=13

নিয়ম ৩: কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসের বাইরের প্রধান শক্তিস্তরে s অরবিটাল থাকলে এবং এর আগে d অরবিটাল থাকলে সেক্ষেত্রে s এবং d অরবিটালের ইলেকট্রন সংখ্যা যোগ করলে যে সংখ্যা পাওয়া যাবে সেটি হবে মৌলের গ্রুপ নাম্বার।Fe (26) →  1s2      2s2    2p6    3s2     3p6     4s2     3d6

 

এক্ষেত্রে, আয়রন (Fe) -এর বাইরের প্রধান শক্তিস্তরে ও অরবিটাল আছে এবং তার আগের প্রধান শক্তিস্তরে d অরবিটাল আছে। এখানে d অরবিটালে, এটি এবং ও অরবিটালে 2টি ইলেকট্রন রয়েছে। সুতরাং, আয়রন (Fe) -এর গ্রুপ নম্বর হবে 6+2=8

নিচের মৌলগুলোর পর্যায়সারণিতে অবস্থান নির্ণয় কর।

K (19) →  1s2  2s2    2p6    3s2   3p6    4s1           ;পর্যায় ৪, গ্রুপ ১

Zn(30) → 1s2  2s2  2p6  3s2   3p6  4s2  3d10  ;পর্যায় ৪, গ্রুপ ১২

Rb(37) →1s2  2s2  2p6  3s2  3p6  4s2  3d10  4p5s;পর্যায় ৫, গ্রুপ ১

Sb(51) →1s2  2s2  2p6  3s2   3p6  4s2  3d10  4p5s2 4d10  5p3 ;পর্যায় ৫, গ্রুপ ১৫

Ba(56) → 1s2   2s2  2p6  3s2  3p6 4s2  3d10  4p5s2 4d10 5p6s2 ;পর্যায় ৬, গ্রুপ ২

 

Au (79) →1s2  2s2  2p6  3s2  3p6  4s2  3d10  4p5s2 4d10  5p6s2  4f14  5d9 ;পর্যায় ৬, গ্রুপ ১২

পারমাণবিক আকার অনুযায়ী Ca,Br,Ds,O,Xe,Mg,Cr,Au,Ni,Si,Fr,F মৌলগুলোকে সাজাও

বৃহত্তর থেকে ক্ষুদ্রতম আকারে সাজানো হলোঃ
Fr>Ca>Br>Mg>Cr>Ni>Si>O>Ds>Xe>Au>F

যোজনী ও যোজ্যতা কি?

যোজনী: রাসায়নিক যৌগ গঠনের সময় কোন মৌলের একটি পরমাণু কতগুলো হাইড্রোজেন (H) অথবা তার সমতুল্য (যেমন: ক্লোরিন (Cl), সোডিয়াম (Na) ইত্যাদি) অন্য মৌলের পরমাণুর সাথে যুক্ত হতে পারে তাকে যোজনী বলে।
যোজ্যতা: রাসায়নিক যৌগ গঠনের সময় কোন মৌলের একটি পরমাণু কতগুলো ইলেকট্রন গ্রহণ করে বা প্রদান করে তাকে যোজ্যতা বলে।

১৯শ ও ২০শ সেশনঃ

একটি পদার্থ আরেকটি পদার্থের সাথে কেন যুক্ত হয়? কোন মৌল কোন মৌলের সাথে মিলে যৌগ গঠন করবে তা কিসের উপর নির্ভর করে?

একটি পদার্থ আরেকটি পদার্থের সাথে যুক্ত থাকে রাসায়নিক বন্ধনের মাধ্যমে।প্রত্যেক মৌল তার সর্বশেষ শক্তিস্তরে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে স্থিতিশীল হতে চায়।তাই যখন একই মৌল বা ভিন্ন মৌলের পরমাণু কাছাকাছি আসে তারা তাদের সর্বশেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রন গ্রহণ বা ত্যাগ বা ভাগাভাগি করে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে।ফলে পরমাণুগুলোর মধ্যে এক ধরনের আকর্ষণ তৈরি হয়,এভাবে রাসায়নিক বন্ধন গঠিত হয়।কোন মৌল কোন মৌলের সাথে যুক্ত হবে তা নির্ভর করে ইলেকট্রন বিন্যাস, পারমানবিক আকার,আয়নিকরণ শক্তি ইত্যাদির উপর।

আয়নিক বন্ধন, সমযোজী বন্ধন, ধাতব বন্ধন: কোন ক্ষেত্রে কোনটি ঘটে? কীভাবে ঘটে?

আয়নিক বন্ধন কীভাবে ঘটে:

বিপরীত চার্জযুক্ত আয়নের মধ্যে: যখন একটি পরমাণু ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়নে (ক্যাটায়ন) পরিণত হয় এবং অন্য পরমাণু ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক আয়নে (অ্যানায়ন) পরিণত হয় তখন তাদের মধ্যে আয়নিক বন্ধন তৈরি হয়।

সমযোজী বন্ধন কীভাবে ঘটে:

ইলেকট্রনের ভাগাভাগি: দুটি অধাতু পরমাণু তাদের ইলেকট্রন শেয়ার করে একটি স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে এবং সমযোজী বন্ধন তৈরি করে।

ধাতব বন্ধন কীভাবে ঘটে:

ধাতু পরমাণুগুলো তাদের যোজ্যতা ইলেকট্রন ত্যাগ করে ইলেকট্রনের “সমুদ্র” তৈরি করে।ধনাত্মক ধাতু আয়নগুলো ইলেকট্রনের সমুদ্রের দ্বারা আকৃষ্ট হয়। ফলে ধাতব বন্ধন তৈরি হয়।

বায়ু দূষণকারী পদার্থগুলোর মধ্যে কোন ধরণের বন্ধন কাজ করে?

বায়ু দূষণকারী পদার্থের নাম

কোন কোন মৌলের সমন্বয়ে সৃষ্ট

কোন ধরনের রাসায়নিক বন্ধন

উত্তরের পক্ষে যুক্তি কী?

কার্বন মনোক্সাইড (CO)

C ও O

সমযোজী

C ও O পরমাণু ইলেক্ট্রন ভাগাভাগি করে অষ্টক পূরণ করে

ওজোন (O3)

O

সমযোজী

O পরমাণু পরস্পর ইলেক্ট্রন ভাগাভাগি করে অষ্টক পূরণ করে

নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড(NO2)

N ও O

সমযোজী

N ও O পরমাণু ইলেক্ট্রন ভাগাভাগি করে অষ্টক পূরণ করে

সালফার ডাই অক্সাইড(SO2)

S ও O

সমযোজী

S ও O পরমাণু ইলেক্ট্রন ভাগাভাগি করে অষ্টক পূরণ করে

২১শ ও ২২শ সেশনঃ

CO, O3, NO2, SO2 ইত্যাদি বায়ু দূষণকারী যৌগ কোথায় তৈরি হয়,কী ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় উৎপাদ হিসেবে তৈরি হয়? কী ধরনের কৌশল বা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এই ক্ষতিকর  পদার্থ নি:সরণ বন্ধ করা সম্ভব?

তৈরীর স্থানঃ শিল্প কারখানার চুল্লী, জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ার ফলে, যানবাহনের উচ্চ তাপমাত্রায় জ্বালানী দহন, বন উজাড়, খনিজ পদার্থ প্রক্রিয়াজাতকরন ইত্যাদি।

ক্ষতিকর পদার্থ নির্গমন নিয়ন্ত্রণ:

প্রযুক্তি: ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা: ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক প্রিসিপিটেটর, স্ক্রাবার, ফিল্টার ব্যবহার

জ্বালানী দক্ষতা বৃদ্ধি: উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার, জ্বালানীর পূর্ণ দহন নিশ্চিত করা

পরিবেশবান্ধব জ্বালানী ব্যবহার: : নবায়নযোগ্য জ্বালানী, CNG, LPG ব্যবহার

নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা: কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, নিয়মিত পরিদর্শন

কৌশল:

সচেতনতা বৃদ্ধি: জনসাধারণকে বায়ু দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে শিক্ষিত করা।

পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন: গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, যানবাহনের নির্গমন নিয়ন্ত্রণ।

বৃক্ষরোপণ: বৃক্ষরোপণ বৃদ্ধি, বনায়ন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি।

ভাবনার খোরাকঃClean energy বা “পরিচ্ছন্ন শক্তি” কি?

Clean energy” বা “পরিচ্ছন্ন শক্তি” হল এমন শক্তি যা উৎপাদনের সময় ক্ষতিকারক বায়ু দূষণকারী পদার্থ নিঃসরণ করে না। এটি সাধারণতঃ পুনঃনবায়নযোগ্য শক্তি উৎস থেকে উৎপাদিত হয়, যা প্রাকৃতিকভাবে পুনঃনির্মিত হয় এবং ক্ষীণ হয়ে যায় না। তবে, শুধু পুনঃনবায়নযোগ্য শক্তিই নয়, বরং যেকোনো এমন প্রযুক্তি বা পদ্ধতি যা কম বা কোনো দূষণ ছাড়াই শক্তি উৎপাদন করে তাকেই “clean energy” বলা যায়।

২৩শ সেশনঃ

ভাবনার খোরাকঃ বাতাস থেকে উইন্ডমিলের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করা হলে বায়ূদূষণ বাড়বে নাকি কমবে?

বাতাস থেকে উইন্ডমিলের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করলে বায়ূদূষণ কমবে। কারণ, উইন্ডমিল বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কোন জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ায় না। জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানোর ফলেই বায়ুতে ক্ষতিকর দূষণকারী পদার্থ নির্গত হয়।
উইন্ডমিল পরিবেশবান্ধব এবং পুনঃনবায়নযোগ্য শক্তির উৎস। এটি বাতাসের গতিশক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, যা কখনোই শেষ হবে না।

As an Amazon Associate I earn from qualifying purchases.

veg_admin

Share
Published by
veg_admin
Tags: AuBrClean energy বা "পরিচ্ছন্ন শক্তি" কি?CrDsF মৌলগুলোকে সাজাওFrMgNiOSiXeআপেক্ষিক আণবিক ভর কিভাবে বের করা হয়?আয়নিক বন্ধনইলেকট্রন বিন্যাসের নীতি (আউফবাউ নীতি) কী?ইলেকট্রন বিন্যাসের ব্যাতিক্রমউদ্ভিদ ও প্রাণিঊর্ধ্বপাতন প্রক্রিয়া বলতে কী বুঝ?একটি পদার্থ আরেকটি পদার্থের সাথে কেন যুক্ত হয়? কোন মৌল কোন মৌলের সাথে মিলে যৌগ গঠন করবে তা কিসের উপর নির্ভর করে?কোন কোন পদার্থ বায়ুতে থাকলে বায়ু দূষিত হয়? এসব পদার্থের ধরন কেমন?গলনধাতব বন্ধন: কোন ক্ষেত্রে কোনটি ঘটে? কীভাবে ঘটে?পদার্থের এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তন কীভাবে ঘটে?পরমাণুতে ইলেক্ট্রন কিভাবে বিন্যাস্ত থাকে?পর্যায় সারণি কী?পর্যায় সারণিতে মৌলের অবস্থান নির্ণয় কিভাবে করবে?পাতনপারমাণবিক আকার অনুযায়ী Caপারমাণবিক ভর ও আপেক্ষিক পারমাণবিক ভরের পার্থক্য কি?বাতাস থেকে উইন্ডমিলের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করা হলে বায়ূদূষণ বাড়বে নাকি কমবে?বাতাস দূষিত হয় কোন প্রক্রিয়ায়?দূষণকারী পদার্থ কীভাবে ছড়ায়?তরল ও কঠিন পদার্থেও কি একইভাবে দূষণ ঘটে?বায়ু দূষণবায়ু দূষণ class 9বায়ু দূষণকারী পদার্থগুলোর মধ্যে কোন ধরণের বন্ধন কাজ করে?মানবস্বাস্থ্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বায়ু দূষণের প্রভাব কিযে অঞ্চলে বাতাস দূষিত সেখানে মানুষের কী কী অসুবিধা হচ্ছে?যেসব স্থানে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় সেখানের বিশেষ কি বৈশিষ্ট্য আছে?সমযোজী বন্ধনস্ফুটন

Recent Posts

রোধ, জল, বৃষ্টি। ৬ষ্ঠ শ্রেনী। বিজ্ঞান-অনুশীলন বই

আমরা ষষ্ঠ শ্রেনীর বিজ্ঞান-অনুশীলন বইয়ের ৪র্থ অধ্যায়ে আলোচিত "রোধ, জল, বৃষ্টি"-শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন…

1 month ago

গতির খেলা। ৬ষ্ঠ শ্রেনী। বিজ্ঞান-অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা জানবো ষষ্ঠ শ্রেনীর বিজ্ঞান বিষয়ের ৩য় শিখন অভিজ্ঞতা গতির খেলা  সম্পর্কে। প্রথম, দ্বিতীয় ও…

1 month ago

ক্ষুদে বাগানঃটেরারিয়াম।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৭ম অধ্যায়,ক্ষুদে বাগানঃটেরারিয়াম  সম্পর্কে জানবো। প্রথম ও…

1 month ago

হরেক রকম খেলনার মেলা।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৬ষ্ঠ অধ্যায়,হরেক রকম খেলনার মেলা  সম্পর্কে জানবো।প্রথম…

1 month ago

অদৃশ্য প্রতিবেশী।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৫ম অধ্যায়, অদৃশ্য প্রতিবেশী  সম্পর্কে জানবো।সেশন শুরুর…

1 month ago

সূর্যালোকে রান্না।সপ্তম শ্রেণী| বিজ্ঞান- অনুশীলন বই

এই পোস্টে আমরা সপ্তম শ্রেনীর,বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৪র্থ অধ্যায়, সূর্যালোকে রান্না সম্পর্কে জানবো।প্রথম ও দ্বিতীয়…

1 month ago