প্রশ্ন-১: গতি কাকে বলে?
উত্তর: গতি হলো সময়ের সাথে বস্তুর অবস্থান পরিবর্তনের হার।
প্রশ্ন-২: সরল গতি কাকে বলে?
উত্তর: কোনো বস্তুর গতি যদি একটি সরলরেখার উপর সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে তার গতিকে সরল গতি বলে।
যেমন: রাস্তায় গাড়ি চলা, হেটে যাওয়া কোনো লোক ইত্যাদি
প্রশ্ন-৩: বক্রগতি কাকে বলে?
উত্তর: সরলরৈখিক গতিতে চলা কোনো বস্তুর ওপর কোনো সময়ে বল প্রয়োগ করে যদি তার গতিপথ পরিবর্তন করে দেয়া হয় তাহলে ঐ নতুন গতিকে বক্রগতি বলা হয় ।
যেমন: ভার নিক্ষেপ, ঢিল ছুড়ে মারা, ক্রিকেট বল উপর থেকে নিচে পড়ার গতি ইত্যাদি
প্রশ্ন-৪: ঘূর্ণন গতি কাকে বলে?
উত্তর: কোনো বস্তু যদি একটি নির্দিষ্ট বিন্দু বা অক্ষকে কেন্দ্র করে সেই বিন্দু বা অক্ষের চারদিকে বৃত্তাকার পথে গতিশীল থাকে তবে সেই গতিকে ঘূর্ণন গতি বলে।
যেমন: বৈদ্যুতিক পাখার গতি, ঘড়ির কাটার গতি, সাইকেলের চাকার গতি ইত্যাদি
প্রশ্ন-৫: পর্যাবৃত্ত গতি কাকে বলে?
উত্তর: কোনো গতিশীল বস্তুকণার গতি যদি এমন হয় যে, এটি এর গতি পথে কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পর পর একই দিক থেকে অতিক্রম করে তবে সেই গতিকে পর্যাবৃত্ত গতি বলে। যেমন: বৈদ্যুতিক পাখার গতি, ঘড়ির কাটার গতি, সাইকেলের চাকার গতি ইত্যাদি।
এবার নিচের এই বিভিন্ন ধরনের গতি আর কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় তা তোমার পাশের বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করে ছক-৮ লিখে ফেলো।
ছক-৮
বিভিন্ন প্রকার গতি | উদাহরণ |
সরল গতি | রাস্তায় গাড়ি চলা, সোজা হেটে যাওয়া কোনো লোকের গতি ইত্যাদি |
বক্র গতি | ভার নিক্ষেপ, ঢিল ছুড়ে মারা, ক্রিকেট খেলায় বল উপর থেকে নিচে পড়ার গতি ইত্যাদি |
ঘূর্ণন গতি | চাঁদ ও পৃথিবীর ঘূর্ণন, বৈদ্যুতিক পাখার গতি, ঘড়ির কাটার গতি, সাইকেলের চাকার গতি ইত্যাদি |
পর্যাবৃত্ত গতি | স্প্রিংয়ে কোনো বস্তুর দোল খাওয়া, বৈদ্যুতিক পাখার গতি, ঘড়ির কাটার গতি, সাইকেলের চাকার গতি ইত্যাদি |
ছক-৩ থেকে তোমার দলের সদস্য যে দৌড়ে অংশ নিয়েছিল তার বেগ কত তা পরের পৃষ্ঠার ফাঁকা জায়গায় হিসাব করে বলো তো।
খেলার নাম – দৌড় প্রতিযোগীতা |
প্রতিযোগীর নাম | দুরত্ব (m) | সময় (s) | অবস্থান (ক্রম) |
রানা | ১০০ | ১৬ | ১ম |
রহিম | ১০০ | ১৭.৫ | ২য় |
করিম | ১০০ | ১৯ | ৩য় |
সীমা | ১০০ | ২০.৫ | ৪র্থ |
রীমা | ১০০ | ২১ | ৫ম |
মীনা | ১০০ | ২১.৫ | ৬ষ্ঠ |
সালমা | ১০০ | ২২ | ৭ম |
প্রতি এক সেকেন্ডে অতিক্রান্ত দূরত্বকে বেগ বলে।অর্থাৎ মোট দূরত্বকে সময় দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যায় তাই বেগ।
আমরা জানি,
বেগ = (দূরত্ব ÷ সময়) মি/সে.
সুতরাং রানার বেগ= (দূরত্ব ÷ সময়) মি/সে. = ১০০÷১৬=৬.২৫ মি/সে.
রহিমের বেগ= (দূরত্ব ÷ সময়) মি/সে. = ১০০÷১৭.৫=৫.৭১৪ মি/সে.
করিমের বেগ= (দূরত্ব ÷ সময়) মি/সে. = ১০০÷১৯=.৫.২৬৩ মি/সে.
সীমার বেগ= (দূরত্ব ÷ সময়) মি/সে. = ১০০÷২০.৫=৪.৮৭৮ মি/সে.
রীমার বেগ= (দূরত্ব ÷ সময়) মি/সে. = ১০০÷২১=৪.৭৬২ মি/সে.
মীনার বেগ= (দূরত্ব ÷ সময়) মি/সে. = ১০০÷২১.৫=৪.৬৫১ মি/সে.
সালমার বেগ= (দূরত্ব ÷ সময়) মি/সে. = ১০০÷২২=৪.৫৪৫ মি/সে.
দৌড় শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে কি থেমে যেতে পেরেছিলে ?
না, দৌড় শেষ হবার পরেও আরো কয়েক কদম এগিয়ে থামতে হয়েছিল, শরীরে গতির প্রবণতা ছিলো।একটি নির্দিষ্ট বেগ অর্জন করার পর হঠাৎ বেগ শূন্য করা সহজ নয়। তাই ধীরে ধীরে বেগ কমিয়ে শূন্য করতে হয়।
ক্যারম খেলার সময় আস্তে টোকা দিলে গুটি একটু এগিয়ে গিয়ে থমকে যাই কেন?
ক্যারম খেলার সময় গুটিতে টোকা দিলে অর্থাৎ বল প্রয়োগ করলে গুটিটি গতিশীল হয়। কিন্তু একটু এগিয়ে গিয়ে গুটিটি থমকে যায় কারণ ঘর্ষণ বল কাজ করেছে।
বোরিক পাউডার দিলে কি গুটির গতির কোন পরিবর্তন হয়?
হ্যাঁ, বোরিক পাউডার ব্যবহার করলে ঘর্ষণ বল কমে যায় ফলে গুটির গতি বাড়ে।
ক্যারাম খেলার সময় একটি গুটি যত জোরে গিয়ে অন্য গুটিকে ধাক্কা দেয় সেটি তত বেশি গতিতে ছিটকে অন্যদিকে ছুটে যায়, এর কারণ কী?
উত্তর-যখন একটি গুটি অন্য গুটিকে ধাক্কা দেয়, তখন ধাক্কা দেওয়া গুটির ভরবেগ ধাক্কা খাওয়া গুটিতে স্থানান্তরিত হয়। ধাক্কা দেওয়া গুটির ভরবেগ যত বেশি হবে, ধাক্কা খাওয়া গুটি তত বেশি গতিতে ছিটকে যাবে।ক্যারাম খেলার সময় একটি গুটি যত জোরে গিয়ে অন্য গুটিকে ধাক্কা দেয় সেটি তত বেশি গতিতে ছিটকে অন্যদিকে ছুটে যায়, এর কারণ হল ভরবেগের সংরক্ষণের নীতি।
ভরবেগের সংরক্ষণের নীতি অনুসারে, বাইরের কোন বল প্রয়োগ না করলে একটি বদ্ধ ব্যবস্থার মোট ভরবেগের পরিমাণ একই থাকে।
ধরো, একটা বল উপর থেকে পড়ছে, বলটা বেশি উপর থেকে পড়লে কি বেশি জোরে পড়বে? নাকি যে উচ্চতা থেকেই পড়ুক একই রকম জোৱে নিচে এসে পড়বে?
উত্তর: একটি বলকে উপর থেকে নিচে ফেলার সময় গতি নির্ভর করবে তার উচ্চতার উপর। যত উপর থেকে বলটিকে ফেলবে তত জোরে সে মাটিতে পড়বে। কারণ বলটি যখন উপরে থাকে তার মধ্যে স্থিতিশক্তি জমা থাকে। নিচে পড়ার সময় তার স্থিতিশক্তি গতিশক্তিতে রূপান্তর হয়। বলটি যত উপরে থাকবে তাতে তত বেশি স্থিতিশক্তি সঞ্চিত থাকবে। তাই নিচে পড়ার সময় গতিশক্তিও বেশি হবে। আর যত বেশি গতিশক্তি তত বেশি তার গতি। তাই বলটি যত উপর হতে ফেলা হবে তত জোরে পড়বে।